পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৯ এএম
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:০৬ এএম
ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। প্রবা ফটো
বছরের শুরুতেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। সেই সঙ্গে হিমালয় থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় দেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়ায় তীব্র শীতের দাপট শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে বয়ে যাচ্ছে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় পথঘাটসহ চারদিক। রাত যত গভীর হয় ততই কুয়াশা বাড়তে থাকে। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকে কুয়াশা। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। আজ বুধবার (৩ জানুয়ারি) তাপমাত্রা অনেকটা কমায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। সকাল ৯টায় জেলায় দেশের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে কারণে ভোর থেকে মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের তুলনায় উত্তরের এ জেলায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আজ সকাল ৯টায় জেলায় দেশের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬টায় জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিন ও রাতের তাপমাত্রা ৭ থেকে ২০ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে।
এ শীতে ইজিবাইক, রিকশাচালক, দিনমজুর, পরিবহন শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়েছে। শীতের কারণে সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছে না তারা। শীত নিবারণে আগুন পোহাচ্ছে মানুষ।
বোদা উপজেলার দিনমজুর অলকেশ রায় বলেন, ‘গত দুই দিনের ঠান্ডায় একেবারে কাহিল হয়ে পড়েছি। তীব্র শীতের কারণে সকালবেলা কাজে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু কাজে না গেলে খাব কী? পেটের দায়ে শীতের মাঝেও কাজের খোঁজে বের হতে হচ্ছে।’
এদিকে হাসপাতালগুলোয় প্রতিনিয়তই বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। জ্বর সর্দি কাশি ডায়রিয়া শ্বাসকষ্টসহ নানা শীতজনিত রোগে হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা। গড়ে ৩ শতাধিক রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া গড়ে অন্তত ৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। বেডে জায়গায় না হওয়ায় মেঝেতে বিছানা করে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেবাদানে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
সদর উপজেলার নুনিয়াপাড়ার আমিনা বেগম বলেন, ‘ঠান্ডা লেগে দুই দিন ধরে ছেলের ডায়রিয়া। মাঝে মাঝে বমিও করছিল। এখন চিকিৎসা নিতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে আগের তুলনায় আমার ছেলে কিছুটা সুস্থ হয়েছে।’
তবে চলতি সপ্তায় শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
তিনি বলেন, ‘হিমালয়ে থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় জেলায় শীতের তীব্রতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বুধবার রোদের দেখা মিললেও কাঙ্ক্ষিত উত্তাপ ছড়াতে না পারায় শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।’ সেই সঙ্গে চলতি মাসে জেলার ওপর দিয়ে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।