দিনাজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২১ পিএম
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:২১ পিএম
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে। প্রবা ফটো
ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর হাঁড় কাপানো কনকনে শীতে কাঁপছে দিনাজপুর। বিপর্যস্ত জনজীবন ও প্রাণিকুল। পৌষ মাসের শেষে শীতে দিনাজপুরের জবুথবু অবস্থা। বৃষ্টির মতো গুঁড়িগুঁড়ি কুয়াশা পড়ছে। গত তিন দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। তীব্র শীতের কারণে সড়কে মানুষের চলাচল কমে যাওয়ায় এবং কাজ না পাওয়ায় রোজগার কমেছে শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষের। এ জেলায় আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।
তীব্র শীতের কারণে শিশু ও বয়স্কদের বেড়েছে কষ্ট। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, অরবিন্দু শিশু হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগী বেড়েছে।
দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখাসহ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আজ তাপামাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। যা দেশের সর্বনিম্ন এবং জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে জেলার ওপর দিয়ে। তবে শীত কমে ১৮ বা ১৯ জানুয়ারি জেলায় বৃষ্টি হতে পারে।
বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বাহোইল গ্রামের শাহজাহান আলী বলেন, ঠান্ডাত অবস্থা কাহিল বাপু। কাম-কাইজ নাই। বসি আছি। পেটের তাগিদে বাহির হইছি। পাইসা-কড়ি না থাকায় এইবার গরম কাপড় কিনা হইনি। খুব কষ্টে দিন কাটেছে বাপু। পারলে এগনা কম্বল-টম্বল দিয়া সাহায্য করেন।
কাজের সন্ধানে আরেক অপেক্ষমান নারী নির্মাণ শ্রমিক শহরের হঠাৎপাড়া এলাকার মোহেচেনা বেগম বলেন, ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো কামকাইজও করা যায় না। কাম না করিলে টাকা দিবে কে? গরিব মানুষের বাঁচার উপায় নাই। যে তরিতরকারির দাম। কাছেই ভিড়া যায় না। খাবো, না গরম কাপড় কিনব? এই শীতে কেমন করে বাঁচব আল্লাহই জানে।
বীরগঞ্জের নিচপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, হিমেল বাতাস আর ঠান্ডায় হাত-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। গরু-ছাগলও বাড়ির বাইর করা যাচ্ছে না। প্রাণিকুলের অবস্থাও কাহিল।