× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৫ বিভাগে ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৬ পিএম

আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৪ পিএম

 তীব্র শীত সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাস্তায় চলাচল করে জনসাধারণ।বরিশাল নগরীর কাকলীর মোড়। ছবি : জুয়েল রানা

তীব্র শীত সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাস্তায় চলাচল করে জনসাধারণ।বরিশাল নগরীর কাকলীর মোড়। ছবি : জুয়েল রানা

তীব্র শীত ও কুয়াশার মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও কিছুটা রোদ-বৃষ্টির দেখাও মিলেছে। ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থার মধ্যে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, যশোরসহ কিছু জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবার ঢাকা ও আপশাপাশের জেলার আকাশে একঝলক রোদও উঁকি দিয়েছে। শীতের এই বিচিত্র আচরণের দিন বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) পঞ্চগড়, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুড়িগ্রাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাপমাত্রা নেমে যায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। এ জন্য এসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। শীতের তীব্রতার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘটনা দেশে এটিই প্রথম। এর আগে মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যাবে বলে সিদ্ধান্ত দেয়।

দেশের কয়েকটি বিভাগে সপ্তাহজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি বিভাগেও অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। দেশের বেশিরভাগ স্থানে ঘন কুয়াশার কারণে দেখা মিলছে না সূর্যের। এরই মধ্যে গত বুধবার থেকে খুলনায় শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। বৃহস্পতিবার তা ছড়িয়েছে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে। মাঘের শুরুতে তীব্র শীতের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় এসব জনপদে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। খুব প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বের হয়নি। 

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) জানিয়েছে, সারা দেশে বৃহস্পতিবার মোট ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এসব অঞ্চলের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ১১ মিলিমিটার, মাদারীপুরে ১ ও ফরিদপুরে সামান্য। রাজশাহীতে ২ মিলিমিটার, চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা ও চাঁদপুরে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে খুলনা বিভাগে। বিভাগটিতে মোট ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে খুলনায় ৪ মিলিমিটার, সাতক্ষীরায় ১২ মিলিমিটার, যশোরে ২২ মিলিমিটার, চুয়াডাঙ্গায় ২০ মিলিমিটার, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১ মিলিমিটার এবং বরিশাল বিভাগের বরিশালে ৫ মিলিমিটার, ভোলায় ২ মিলিমিটার, পটুয়াখালী ও খেপুপাড়ায় সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

পঞ্চগড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ 

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে তীব্র শীতের কারণে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামায় জেলার সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃহস্পতিবার পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে জেলা শিক্ষা বিভাগ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস পৃথক পৃথক চিঠি ইস্যু করে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করে।

দিনাজপুরে প্রাথমিকে পাঠদান বন্ধ : সিদ্ধান্তহীনতায় মাধ্যমিক 

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় প্রাথমিকে পাঠদান বন্ধ থাকলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা না বন্ধ থাকবে তা আগামী রবিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন। দিনাজপুরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে টানা ১০ দিন ধরে শীতের প্রকোপ চলছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৮ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। 

চুয়াডাঙ্গায় মাঘের বৃষ্টি ও শীতে বিদ্যালয় বন্ধ 

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় মাঘের বৃষ্টিতে হাড় কাপানো শীত পড়ছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। জেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো এক দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর বৃহস্পতিবার  ভোরের দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যায়। সকাল ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। 

কুড়িগ্রামে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগ। বৃহস্পতিবার জেলায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নবেজ উদ্দিন সরকার ও জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শামসুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জে তীব্র শীতে বন্ধ মাধ্যমিক বিদ্যালয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঘন কুয়াশা, মেঘলা আকাশ ও মাঘের তীব্র শীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। যদিও প্রাথমিক ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো খোলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন পরিস্থিতিতে গোমস্তাপুরের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগ। 

গোপালগঞ্জে শীত-বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কনকনে শীতের পর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গোপালগঞ্জে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। তীব্র শীত আর বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হতে পারেনি মানুষ। বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরাও। রাস্তায় কম যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

বরিশালে শীত ও বৃষ্টিতে ভোগান্তি, মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা 

বরিশাল প্রতিনিধি জানান, বরিশালে তীব্র শীতের সঙ্গে বৃষ্টি হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে শিশু শিক্ষার্থীরা। শীত ও বৃষ্টি উপেক্ষা করেও শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত। এ সময় ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকালে বরিশালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। 

বৃষ্টিতে বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ

যশোর প্রতিনিধি জানান, তীব্র শীতে সঙ্গে বৃষ্টি যোগ হওয়ায় যশোরে বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার যশোরের শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত। গত কয়েক দিনে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে যশোর। সেই শীতেই জবুথবু হয়ে পড়ে মানুষ ও প্রাণিকুল। শীতের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টি যেমন শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি ছেদ পড়েছে কর্মজীবী মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে। 

১০ দিন পর সূর্যের দেখা, জনমনে স্বস্তি 

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, প্রায় ১০ দিন পরে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় সূর্যের দেখা পাওয়ায় জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে। এতে বয়স্ক, শিশু ও নিম্ন আয়ের মানুষের চোখেমুখে আনন্দের ছাপ থাকলেও এই অঞ্চলে তাপমাত্রা এখনও অনেক কম। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। সকাল ৯টার পর থেকে সূর্য ওঠার পরে ঘর থেকে বেরিয়ে কাজে নেমে পড়ে অনেকেই। হাটবাজার ও গ্রামে সমানতলে ফিরেছে কর্মব্যস্ততা। 

শ্রীমঙ্গলের হাড়কাঁপানো শীতে প্রাণীরাও জবুথবু

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের হাড়কাঁপানো ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়া জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের সাথে তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে পড়ছে প্রাণীরাও। মানুষের মতোই শীতে নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পশুপাখিরা। 

সাতক্ষীরায় ঠান্ডায় আক্রান্ত অনেকে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরায় শীতল হাওয়ার দাপটে যেন তেজহীন সূর্য। কনকনে শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা দুই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক মানুষ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা