মেরিনা লাভলী, রংপুর
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২১ এএম
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩১ পিএম
ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া বোরো বীজতলা পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক। রংপুর সদর উপজেলার চন্দনপাট ইউনিয়নের ইশ্বরপুর গ্রাম থেকে তোলা ছবি। প্রবা ফটো
টানা দশ দিনের শৈত্যপ্রবাহে রংপুরে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে বোরোর বীজতলা। রোপণ মৌসুমের আগে বীজতলা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ায় কৃষিপ্রধান এ অঞ্চলের কৃষকেরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে বীজতলা রক্ষায় শীত উপেক্ষা করেই প্রাণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছেন কৃষকরা। এর অংশ হিসেবে আগাম বোরো ধান রোপণে জমি প্রস্তুতের কাজও সম্পন্ন করেছেন অনেকে।
কষি বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, তীব্র শীতে বীজতলার কিছু ক্ষতি হলেও কৃষকদের চেষ্টায় তা কাটিয়ে সামাল দেওয়া গেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বীজতলা তৈরি করায় চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার সুযোগ নেই বলেও আশ্বস্ত করছেন তারা।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রংপুরে এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৪১০ হেক্টর। আর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৭২ হেক্টর ধরা হলেও করা হয়েছে ৬ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চন্দনপাট ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর গ্রামে কৃষকরা বোরো আবাদের জন্য জমিতে জৈব সার দেওয়া, মাটির আল কাটা, ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিচু হওয়ায় এসব জমিতে বছরে দুবার আবাদ হয়। বোরো আবাদ এ এলাকার কৃষকের জীবন-জীবিকার অংশ হয়ে গেছে। জমির পাশেই তৈরি করা হয়েছে বীজতলা। গত ৮ জানুয়ারি থেকে রংপুরে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় প্রচণ্ড ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় কোল্ড ইনজুরিতে পড়েছে বীজতলা। ফ্যাকাশে হয়ে আসা বীজতলা রক্ষায় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন কৃষকরা। কেউ পানিতে ডুবিয়ে, কেউ পলিথিন দিয়ে ঢেকে কিংবা জমে থাকা শিশির ঝরিয়ে বীজতলা রক্ষার চেষ্টা করছেন। কুয়াশা থেকে বাঁচাতে অনেকে বীজতলায় ছাই ছিটিয়েছেন। এরপরও কোনো কোনো এলাকায় তীব্র শীতে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। টানা দশ দিন শৈত্যপ্রবাহের পর গত বৃহস্পতিবার সূর্যের দেখা পাওয়ার পর কৃষকরা দ্রুত বোরো রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চন্দনপাট ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, শীত থেকে যতটুকু বীজতলা রক্ষা হয়েছে, সেই চারা রোপণ করবেন। কম পড়লে কিনতে হবে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়বে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, শৈত্যপ্রবাহের কারণে কোনো কোনো স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বীজতলা হলদে ভাব দেখা গেছে। আমরা কৃষকদের বীজতলা রক্ষায় পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি, শৈত্যপ্রবাহ আর না হলে বোরো চারার কোনো সংকট হবে না। ইতোমধ্যে অনেক স্থানে কৃষকরা বোরো চারা রোপণ শুরু করেছেন। আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব বলে আশা করছি।