× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চাষিদের দুশ্চিন্তা লেটব্লাইট, আলুর ফলন কমার আশঙ্কা

চম্পক কুমার, জয়পুরহাট

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:০২ পিএম

আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৯ পিএম

ঘন কুয়াশা ও কনকনে শতে লেটব্লাইট বা মড়ক রোগে আক্রান্ত আলু গাছ। প্রবা ফটো

ঘন কুয়াশা ও কনকনে শতে লেটব্লাইট বা মড়ক রোগে আক্রান্ত আলু গাছ। প্রবা ফটো

আগাম আলুতে ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় লাভের মুখ দেখলেও ভরা মৌসুম এবং শেষভাগের আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জয়পুরহাটের চাষিরা। গত কয়েক দিনের অব্যাহত ঘন কুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলুক্ষেতে ব্যাপক হারে লেটব্লাইট বা আলুর মড়ক রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে ওই রোগের কারণে গাছের কাণ্ডে ও পাতায় কালো কালো ফোসকা পড়ে মরে যাচ্ছে তরতাজা সবুজ গাছ। এতে আলুর ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। কৃষকদের অভিযাগ, কোনো কীটনাশকেই এই রোগ দমন করা যাচ্ছে না। কৃষি অফিসাররাও কোনো পরামর্শ দিতে আসেন না। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার জেলায় ৩৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আলু চাষ হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৩৫ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে ৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ হয়েছে। কৃষকরা স্থানীয় তিন জাত ও উফশী ১৫ জাত মিলে ১৮ জাতের আলু চাষ করেছে।

কৃষকরা জানায়, আগের বছরগুলোতে আলুর গাছের কাণ্ড ও পাতা পচা বা লেটব্লাইট রোগ হলে কীটনাশক স্প্রে করলে দমন করা যেত। কিন্তু এবার কোনো কাজই হচ্ছে না। হঠাৎ করে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত নামার পর আলুর গাছের কাণ্ড পচে যাচ্ছে। এর ফলে আলুর আশানুরূপ ফলন না হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। এদিকে কৃষি বিভাগ থেকে আবহওয়ার আগাম কোনো খবরও জানানো হয় না।

ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষক আপন হোসেন বলেন, বর্তমানে আবহাওয়ার যে অবস্থা, এ আবহওয়ায় ছত্রাকজনিত রোগে আলু গাছের কাণ্ড পচে যাচ্ছে। এ সময় মাঠপর্যায়ের কৃষি অফিসাররাও কোনো খোঁজ-খবর না নেওয়ায় আমরা কীটনাশকের দোকানদারদের কাছে গিয়ে রোগের নাম বলে ওষুধ নিয়ে এসে জমিতে দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। 

হাদিস খান নামের আরেক কৃষক বলেন, আমরা অনেকেই মানুষের জমি বন্দক নিয়ে চাষ করি। আমি আড়াই বিঘাতে আলু চাষ করেছি। অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে ওষুধ কিনে এনে প্রতি সপ্তাহে দুই-তিনবার স্প্রে করছি, তাতেও পচন আটকানো যাচ্ছে না। এক জমিতে পচা রোগ ধরলে সেখান থেকে পাশের জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে।

কৃষক আব্দুর নূর বলেন, আলুর গাছে পচা রোগ ধরার পর তো আমরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেছি। এক বিঘা জমিতে যদি ৪০ হাজার টাকা খরচের পর আবার এই পচা রোগে গাছ মরতে শুরু করে, তাহলে টাকাইবা উঠবে কীভাবে। কৃষি অফিসাররা মাঠে আসা তো দূরের কথা, গ্রামে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথাও বলেন না।

কীটনাশক ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, আলু গাছের বয়স ২৫-৩০ দিন হলেই ছত্রাক নিরাময়ে ওষুধ দেওয়া শুরু করতে হয়। কিন্তু আলুর গাছে যখন পচা ধরে, তখন অনেক কৃষক ওষুধ দিতে দৌড়ায়। আবার অনেকে বলে আমার জমিতে এখনও পচা রোগ ধরেনি, ধরলে দিমু। একদিকে আবহাওয়া ভালো নয় আবার অনেক ওষুধে দুই নম্বরি আছে, এটাও সত্য।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. রাহেলা পারভীন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, হঠাৎ করে তাপমাত্রা অত্যন্ত কমে গেছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির আকারে কুয়াশা পড়ছে। এটা আলু চাষের জন্য প্রতিকূল আবহাওয়া। এতে করে আলুর লেটব্লাইটের দেখা দিয়েছে। এই আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার্থে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। একটু বেলা করে জমিতে ওষুধ স্প্রে করতে বলা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সচেতনতায় কৃষি বিভাগ আলুর মড়ক লেটব্লাইট বা নাবি ধসা রোগ দমনে কৃষকদের করণীয় শিরোনামে বিভিন্ন পরামর্শ লিখে লিফলেট আকারে বিলি করছি। কিন্তু কৃষকরা সরাসরি দোকানে ওষুধ কিনতে চলে যায়। তারা আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ দিতে পারেন। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা