আবদুল্লাহ আল মামুন, ফেনী
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:১৮ পিএম
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৯ পিএম
দেশের প্রাচীন পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক নিদর্শন ফেনীর ছাগলনাইয়ার প্রাচীন সাত মন্দির রক্ষায় সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের উদ্যোগে গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সংস্কারকাজ। অধিদপ্তরের কুমিল্লা আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ের দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ চন্দ্র দাস জানান, মন্দিরগুলো ভেঙে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এগুলো যাতে ধ্বংস না হয় সেজন্য সংস্কার ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। মন্দিরগুলোকে পূর্বের আদলে শক্তিশালী স্থাপনায় রূপ দিতে যা কিছু করা দরকার তাই করবেন।
এদিকে সংস্কারের পাশাপাশি অরক্ষিত মন্দির এলাকার সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানায়, সাত মন্দির এলাকায় সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ না করা হলে পুনরায় আবর্জনা ফেলার স্থানে পরিণত হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, ‘সাত মন্দিরের বিষয়ে কেউ কিছু অবহিত করেনি। তবে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
দেশের প্রাচীন পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সাত মঠ বা সাত মন্দির ফেনীর ছাগলনাইয়ায় অবস্থিত। প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। উপজেলা শহরের পশ্চিমে বাঁশপাড়ার এসব মন্দির মূলত ছাগলনাইয়ার হিন্দু জমিদার বিনোদ বিহারির আট একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। সাত মঠের একটির মাথা ভেঙে গেছে। তাই দূর থেকে ছয়টির মাথা দেখা যায়। এগুলো মূলত চিতা মন্দির। এজন্য বিনোদ বিহারির বাড়িটি সাত মন্দির বাড়ি বা রাজবাড়ি বা সাত মঠ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
একসঙ্গে সাতটি মঠ ছাগলনাইয়া ব্যতীত দেশের অন্য কোথাও আর দেখা যায় না। প্রতিটি মন্দিরের গায়ে অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। আর প্রতিটি মন্দিরের চূড়া একটি অন্যটির থেকে ভিন্ন। সাতটি মঠ কিন্তু এক সারিতে নয়, দুটি সারিতে দাঁড়িয়ে। এক সারিতে তিনটি, অন্য সারিতে চারটি মিলে সমকোণ তৈরি করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৪৮ সালে জমিদার বিনোদন বিহারি ছাগলনাইয়ায় অবস্থিত পূর্বপুরুষের নিদর্শন জমিদারবাড়ি ও তার সমস্ত সম্পদ ফেলে ভারতের কলকাতা চলে যান। পরে অযত্ন অবহেলায় জমিদারবাড়ি ও বাড়ির আঙিনায় স্থাপিত সাত মন্দির দিন দিন ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। বর্তমানে সেই জমিদারবাড়ির অস্তিত্ব বিলীন হলেও টিকে রয়েছে সাত মন্দির। প্রতিটি মন্দিরের আপাদমস্তক পরগাছায় ছেয়ে গেছে। স্থানীয় কিছু মানুষ সেখানে বসবাস করছে।