চাঁদপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৫৬ পিএম
নিহত ইব্রাহিম ফকির। প্রবা ফটো
লিবিয়ায় দালালের খপ্পরে পড়ে আটকে থাকা চাঁদপুরের কচুয়ার শ্রমিক ইব্রাহিম ফকিরের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে বেনগাজী শহরের আরবান এলাকায় মারা যান তিনি। ইব্রাহিম কচুয়ার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের সফিবাদ গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইব্রাহিমের স্ত্রী রোজিনা বেগম। তিনি জানান, দালালরা তার স্বামীকে আটকে রেখে নির্যাতন ও মারধরের কারণে মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি শুক্রবার রাতে একই গ্রামের সহকর্মী আব্দুল হাকিম মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন। তিনিসহ স্বজনরা মৃতদেহ দেশে আনতে সরকারে কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রোজিনা বেগম বলেন, ‘দালাল চক্রের সদস্য সফিবাদ গ্রামের খোরশেদ আলম এক বছর আগে আমার স্বামীকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে যায়। কাজ না দিয়ে তাকে বদ্ধ রুমে আটকে রেখে টাকার জন্য নানানভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে মারা যান তিনি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, ‘দালালের খপ্পরে এ এলাকার অনেকে নিঃস্ব হয়েছে। দালাল খোরশেদ আলমের কারণে অনেকেই ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছে। ইব্রাহিমের লাশ দেশে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
একই গ্রামের কবির হোসেন লিবিয়ায় দালালের খপ্পর থেকে দুই মাস আগে দেশে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, ‘দালালের কাছে আটকে থাকায় ইব্রাহিম ফকির অনেক কষ্ট পেয়েছেন। মর্মান্তিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই তিনি মারা যান।’
এদিকে ইব্রাহিম ফকিরকে আটকে রাখার ঘটনায় মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে রোজিনা বেগম গত বছর চাঁদপুর আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয়। জানতে চাইলে চাঁদপুর পিবিআই পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল বলেন, ‘তদন্ত চলছে। দালাল চক্রে খোরশেদ আলম ছাড়াও তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ চক্রে আরও কয়েকজন রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ইব্রাহিমের মৃতদেহ দেশে আনতে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।’