প্রবা প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:১৯ পিএম
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৫৮ পিএম
নাজমা আক্তার নামে চার সন্তানের জননী শিকলবন্দি জীবনযাপন করছে। প্রবা ফটো
বরিশালের গৌরনদীতে স্বামীর মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারানো চার সন্তানের জননীকে দুই বছর ধরে বেঁধে রাখা হয় শিকল দিয়ে। পরিবারের দাবি, কোনো চিকিৎসায় সুস্থ না হওয়ায় যাতে করে অন্যত্র চলে যেতে না পারে, সেজন্য শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। পায়ে শিকল নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা ওই নারী হলেন নাজমা আক্তার। তিনি উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের সালতা গ্রামের বৃদ্ধ উমর আলী হাওলাদারের মেয়ে।
নাজমার বৃদ্ধ মা মনোয়ারা বেগম জানান, সাত-আট বছর ধরে মানসিক একটু সমস্যা ছিল। তিন বছর আগে স্বামী রহিম হাওলাদারের মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য পুরোই হারিয়ে ফেলে নাজমা। অর্থের অভাবে স্থানীয় বিভিন্ন কবিরাজের মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সুস্থ হয়নি। অন্যত্র যাতে চলে যেতে না পারে সেজন্য গত দুই বছর ধরে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, যেখানে আমাদের তিন বেলা খাবার জোটে না, সেখানে মেয়ের সুচিকিৎসা করাব কীভাবে ?
নাজমা এক ছেলে ও তিন কন্যার জননী। টিনের ঘরের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে তার এক পা বাঁধা। ঘরের মেঝেতে খড় বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বসে ও শুয়ে কাটে তার দিন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিবারটি এতটাই অসচ্ছল যে, মানসিক ভারসাম্যহীন নাজমার সুচিকিৎসা দেওয়ার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। পরিবারের একজন মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, তিনি ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক বাবা। তার ওপরই সাত সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব। তাদের মুখে ঠিকমতো খাবার তুলে দিতেই তার কষ্ট হয়।
নাজমার চিকিৎসা সরকার ও সামর্থ্যবানদের সহায়তা ছাড়া অসম্ভব বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান জানান, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।