কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:২৩ পিএম
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৪ পিএম
সংরক্ষণের জন্য কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতের বালুচরে পুঁতে রাখা মৃত তিমির কংকাল উত্তোলন করা হয়েছে। প্রবা ফটো
কক্সবাজারের হিমছড়ির সৈকতে ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল ভেসে আসা মৃত তিমি দুটির কংকাল উত্তোলন করেছে বাংলাদেশ ওসানোগ্রাফি রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষা ও গবেষণায় কাজে লাগাতে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বোরি) তিমির কংকালটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। কংকালটি উত্তোলনের পর বোরিতে প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কের রামু উপজেলার পেঁচার দ্বীপে অবস্থিত বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ।
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে বোরির বিজ্ঞানীরা সেই তিমির কংকালের খোঁজে হিমছড়ি সৈকতে খননকাজ শুরু করেন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ৯০ শতাংশ খননকাজ শেষ করা হয়। আজ পুরোপুরি খননকাজ শেষ করে তিমিটির কংকাল সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আলাদা আলাদা হাড়গুলো বিশেজ্ঞদের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে কংকালের পরিপূর্ণ রূপ দেওয়া হবে।’
ড. তৌহিদা রশীদ বলেন, ‘গবেষণা কাজে সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) কর্তৃপক্ষ তিমি দুটির কংকাল উত্তোলনের জন্য বন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিমি দুটির কংকাল দুই প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গবেষণার উদ্দেশ্যে তিমির কংকাল বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের জন্যও উন্মুক্ত থাকবে। এদিকে গত বছরের ১৮ এপ্রিল কলাতলী সমুদ্রসৈকতেও একটি মরা তিমি ভেসে আসে। ব্রাইডস হুয়েল প্রজাতির এই তিমিটিও বালিয়াড়িতে পুঁতে ফেলা হয়।’
ড. তৌহিদা রশীদ বলেন, ‘আগামী শনিবার থেকে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে দুই দিনব্যাপী সমুদ্রবিষয়ক আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের তিন শতাধিক বিজ্ঞানী অংশগ্রহণ করবেন। সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা তিনটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করবেন।’
শনিবার থেকে উত্তোলিত তিমিটির কংকাল সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
২০২১ সালের ১০ এপ্রিল সামুদ্রিক জোয়ারের সঙ্গে ৪৪ ফুট দীর্ঘ একটি মরা তিমি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতে ভেসে আসে। এরপর বনকর্মীরা তিমিটি হিমছড়ি সৈকতের বালিয়াড়িতে ১০ ফুট গর্ত করে পুঁতে ফেলে। এর আগের দিন ৯ এপ্রিল একই সৈকতের চার কিলোমিটার উত্তরে দরিয়ানগরে আরও একটি মরা তিমি ভেসে আসে। ৪৮ ফুট দীর্ঘ সেই তিমিটিও বালিয়াড়িতে পুঁতে ফেলা হয়। বোরির বিজ্ঞানীরা তিমি দুটির নমুনা সংগ্রহ করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজিতে (এনআইবি) পরীক্ষার জন্য পাঠায়। প্রতিবেদনে তিমি দুটি ব্রাইডস হুয়েল বা বলিনোপেট্রা ইডেনি প্রজাতির বলে চিহ্নিত হয়েছে। ৯ এপ্রিল ভেসে আসা তিমিটি নারী লিঙ্গের এবং ১০ এপ্রিল ভেসে আসা তিমিটি পুরুষ লিঙ্গের।