লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:১৭ পিএম
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪৪ পিএম
কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে এক নারী লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরে কুকুর-বিড়ালের কামড় ও আঁচড়ে নারী-শিশুসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা সদর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে কুকুর-বিড়ালের কামড় ও আঁচড়ে আহত হয় তারা।
আহত রোগীদের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়েছে শিশু মোহাম্মদ পাটওয়ারী, মো. মুয়াজ, শিশু আবির, আব্দুর রহিম, রহিমা খাতুন, রিনা আক্তার, শামছুন নাহার, মিতু, শিশু ফরহাদ, হোসনেয়ারা, শিশু রিহান মাহমুদ ও সাব্বির আহমেদসহ শতাধিক রোগী। গত ৪ দিনে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে দুই শতাধিক রোগীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের শাকচর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ পাটওয়ারী জানান, তার ১৫ মাস বয়সি ছেলে মোহাম্মদ পাটওয়ারীকে হাসপাতালে এনে কুকুরে কামড়ের ভ্যাকসিন দিয়েছে। মোহাম্মদের হাতে পাগলা কুকুরে কামড় দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
চররুহিতা ইউনিয়নের চররুহিতা গ্রামের হোসনেয়ারা বেগম বলেন, ‘আমি মোবাইল ফোনে বিদেশে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ করে একটি কুকুর এসে আমার গালে কামড় দেয়। রক্তাক্ত জখম হয়েছি।’
একই গ্রামের হারুনুর রশীদ বলেন, আমার ছেলে রিহান মাহমুদকে হাসপাতালে কুকুরের কামড়ের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সকালে বাড়ির উঠানে রিহান খেলছিল। এ সময় কুকুর এসে রিহানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কুকুরটি তার হাতের বাহু ও পিঠে তিনটি কামড় দেয়।
বিড়ালের কামড়ে আহত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ এলাকার সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘বিড়াল নিয়ে দুষ্টামি করছিলাম। এর মধ্যেই বিড়াল আমার হাতের আঙুলে কামড় দেয়। কোনো সমস্যা হয় কি না, এনিয়ে ভয় লাগছে। এজন্য হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিয়েছি।’
চররমনী মোহন ইউনিয়নের করাতির হাট বাজারের ফার্মাসিস্ট জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকাতে প্রচুর রোগী রয়েছে। তাদের হাসপাতালে যেতে বলেছি। হঠাৎ করে কুকুরের উৎপাত বেড়ে গেছে।’
ভ্যাকসিন প্রদানকারী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আব্দুর রব বলেন, ‘সকাল থেকে ভ্যাকসিন দিচ্ছি। বিপুলসংখ্যক রোগী এসেছে। এখনও হিসাব করতে পারিনি। রোগীদের হাত-পিঠ ও গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কুকুর বিড়ালের কামড়ের দাগ রয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমান হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে সকাল থেকে শতাধিক রোগী এসেছে। তাদের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। কুকুর-বিড়াল থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ের রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। শাকচর, চররুহিতা ও হামছাদী এলাকা থেকে রোগী বেশি এসেছে। পাগলা কুকুরের কামড় থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তৃপক্ষ কুকুরের ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রেখেছেন বলে শুনেছি।