চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫২ পিএম
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩৪ পিএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর আঞ্চলিক সড়কে পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে মরিচাডাঙ্গা এলাকায় নির্মাণাধীন পুলিশ বক্স। প্রবা ফটো
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর আঞ্চলিক সড়কে পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে মরিচাডাঙ্গা এলাকায় একটি পুলিশ বক্স নির্মাণ কাজ শুরু হয়। জেলা পরিষদের অর্থায়নে কাজটি শুরু হলেও গত ৬ বছরেও শেষ হয়নি। সেই নির্মাণাধীন পুলিশ বক্সে এখন নিয়মিতই বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। এ ছাড়া দিনে কিংবা রাতে প্রায়ই ঘটছে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের মরিচাডাঙ্গায় পুলিশ বক্সটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নিরাপত্তার কাজে নিয়জিত পুলিশদের থাকার সুবির্ধাথে এ ঘরটি নির্মাণের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় জেলা পরিষদ। এই উন্নয়ন প্রকল্পের দাতা জেলা পরিষদের সাবেক সংরক্ষিত সদস্য ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিমা খাতুন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনটির ছাদ ও দেয়াল থাকলেও পলেস্তারা করে হয়নি এখনও। নেই দরজা কিংবা জানালা। দীর্ঘদিন ঘরটি পরিত্যক্ত থাকায়, দেয়ালে মাকড়সা জাল বুনিয়েছে। ভবনের ভেতরে বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের পরিত্যক্ত অংশ দেখা গেছে। এখানে নিয়মিতই আড্ডায় বসে মাদকসেবীরা।
আমিনুল ইসলাম নামে এক পথচারী বলেন, এই সড়কটির অনেক এলাকাজুড়ে মানুষের বাড়ি ঘর নাই। যার কারণে রাতের বেলায় সড়কটি পথচারীদের জন্য খুব একটা নিরাপদ নয়। ফলে পুলিশ বক্সটির নির্মাণ কাজ শেষ করে, এখানে পুলিশি পাহারা জোরদার করা হোক। তাহলে পথচারিরা নির্বিঘ্নে পথ চলতে পারবে।
আরেক পথচারী শফিকুল ইসলাম জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর সড়কে একটি পুলিশ বক্স থাকা খুবই প্রয়োজন। প্রায়ই দিনের বেলায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সড়কটিতে পুলিশ বক্স থাকলে দুর্বৃত্তরা এধরনের কাজ করতে পারত না।
প্রকল্পদাতা জেলা পরিষদের সাবেক সংরক্ষিত আসনের সদস্য হালিমা খাতুন বলেন, সড়কটিতে দিনেদুপুরে ডাকাতি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটে। পথচারীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ নিয়ে একটি পুলিশ বক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গোমস্তাপুর থানা পুলিশের নজরদারিতে ওই পুলিশ বক্সটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। পরে টাকার অভাবে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। যদিও আরও দুই লাখ টাকা চেয়ে জেলা পরিষদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পুলিশ বক্সটির নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য বলেছিলাম। পরে তারাও আর উদ্যোগ নেয়নি, কাজও শেষ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ বক্সটি নির্মাণকাজ শেষ করা খুবই প্রয়োজন। সম্প্রতি এক নারীর কাছ থেকে দুপুরে টাকা নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। পুলিশ সেখানে থাকলে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা এই সুযোগ পেতো না। পুলিশ বক্সটি নির্মাণকাজ শেষ করে জায়গাটিতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান বলেন, সরকারি দুই লাখ টাকা খরচ করে যেহেতু রাস্তার পাশে পুলিশ বক্স নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। গত ৬ বছর ধরে এই কাজটি সম্পন্ন হয়নি। সংশ্লিষ্টদের উচিত আবারও নতুন করে বরাদ্দ দিয়ে যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে ঘরটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল, তা হাসিল করা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দিন পুলিশ বক্সটি নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার সময় এখানে কর্মরত ছিলেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সেখানে লোক পাঠাব। যদি নতুন বরাদ্দ দিয়ে পুলিশ বক্সের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা যায়, তাহলে সেটাই করব।
পরিত্যক্ত পুলিশ বক্সের কথা জানে না উল্লেখ করে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ বলেন, ওই সড়কটিতে নিয়মিত পুলিশ গাড়ি নিয়ে টহল দেয়। এ ছাড়া পুলিশ অপ্রীতিকর কোনো খবর পেলেই, ঘটনাস্থলে যায়।