× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

খরচের অজুহাত, প্লাস্টিকের বস্তার অবাধ ব্যবহার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৩৩ পিএম

আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩২ পিএম

প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করছেন মিল মালিকরা। প্রবা ফটো

প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করছেন মিল মালিকরা। প্রবা ফটো

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাটের পরিবর্তে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করছেন রাইস মিল মালিকরা। প্রশাসনের নাকের ডগায় বছরের পর বছর এমন ঘটনা ঘটলেও দেখার যেন কেউ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার রোধে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, গোমস্তাপুর ও নাচোল উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক রাইস মিল রয়েছে। এর মধ্যে ৮৬টি অটো রাইস মিল, প্রায় ২০টি বয়েলড রাইস মিল আর বাকিগুলো অতব রাইস মিল। এসব রাইস মিলে দৈনিক গড়ে ১৬ হাজার ৮৫৬ টন চাল উৎপাদন করে প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়কীকরণ করা হয়। 

২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ধান ও চাল বিপণনে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয় এ দুটি পণ্যে কোনো প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার না করার। এরও চার বছর আগে ২০১০ সালে ৭ অক্টোবর ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক আইন-২০১০’ করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। আইন প্রণয়নের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এর কার্যত কোনো প্রয়োগই নেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বেশিরভাগ রাইস মিলেই চালের মোড়কীকরণে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার হচ্ছে। হাতেগোনা দুই-তিনটি মিলে শতভাগ পাটের বস্তায় চাল বাজারজাত করতে দেখা গেলেও বাকি মিলগুলোতে দেদার চলছে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার। যদিও এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে নারাজ মিল মালিকরা। 

প্রকাশ না করার শর্তে এক রাইস মিল মালিক জানান, প্যাকেটের খরচ কমাতেই প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করতে বাধ্য হয় মিল মালিকরা। যেখানে ৫০ কেজির একটি পাটের বস্তার দাম ৪৫ থেকে ৬০ টাকা, সেখানে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা দিলেই পাওয়া যায় একটি প্লাস্টিকের বস্তা। সে কারণে ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকের বস্তায় চাল সরবরাহে উৎসাহিত হচ্ছেন।

আরেক মিল মালিকের দাবি, চাল মোড়কীকরণে পাটের বস্তা ব্যবহার করলে চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়ে যাবে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ পয়সা। কারণ পাটের বস্তা ব্যবহার করতে গেলে ৫০ কেজির বস্তায় অতিরিক্ত ৩০-৪০ টাকা গুনতে হয়। তবে সরকার স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করলে রাইস মিল মালিকরা পাটের বস্তা ব্যবহারে উৎসাহী হবেন বলেও মনে করেন তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, রাইস মিলগুলো চালুর সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) নিতে হয়। সেখানেও প্লাস্টিকের বস্তায় চাল মোড়কীকরণ না করার শর্ত সুস্পষ্টভাবে দেওয়া আছে। এ ছাড়া পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক আইনের ৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত পণ্য, পাটজাত মোড়ক দ্বারা মোড়কজাতকরণ ব্যতীত বিক্রি, বিতরণ বা সরবরাহ করতে পারবেন না।

তিনি আরও জানান, রাইস মিলগুলোতে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার বন্ধে মাঝেমধ্যেই অভিযান চালানো হয়। কিন্তু অভিযান করেও কোনো লাভ হয় না। 

জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা অজিত কুমার রায় জানান, বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসনের সভায় পাটের বস্তায় চাল বাজারজাত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সভায় মিল মালিকরা পাটের বস্তা ব্যবহারের অঙ্গীকার করলেও পরে তা বাস্তবায়ন করেন না। 

তিনি বলেন, ‘আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করতে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছি। চলতি মাসেও রাইস মিলগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম জানান, রাইস মিলগুলো প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার বন্ধে মাঝেমধ্যেই অভিযান চালানো হয়। তবে সর্বশেষ কবে অভিযান চালানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। 

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা