× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বলিহার রাজবাড়িকে পুরাকীর্তির স্বীকৃতি

নওগাঁ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৩০ পিএম

আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:০১ পিএম

বলিহার রাজবাড়িকে পুরাকীর্তির স্বীকৃতি

ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ নওগাঁবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা অবশেষে বাস্তবায়ন হতে চলেছে। সদর উপজেলার বলিহার ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বলিহার রাজবাড়ি সংরক্ষণের জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সব প্রক্রিয়া শেষ করে একে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করা হয়েছে। 

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বদলগাছি পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সেখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এ সংক্রান্ত সাইন বোর্ড টাঙিয়েছে এবং রাজবাড়িটি পুরোনো আদলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


ফজলুল করিম আরজু বলেন, সম্রাট আওরঙ্গজেব কর্তৃক জায়গির লাভ করে বলিহার জমিদার পরিবার প্রতিষ্ঠা করেন নৃসিংহ চক্রবর্তী। বলিহার জমিদারগণ তাদের জমিদারির বিভিন্ন স্থানে নানা স্থাপনা গড়ে তোলেন, যার মধ্যে বলিহার রাজবাড়িটি অন্যতম। দেশ বিভাগের সময় বলিহারের রাজা ছিলেন বিমলেন্দু রায়। জমিদারদের মধ্যে রাজেন্দ্রনাথ ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে বলিহারে একটি রাজ-রাজেশ্বরী দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মন্দিরে রাজেশ্বরী দেবীর অপরূপা পিতলের মূর্তি স্থাপন করেন। বলিহারের ৯ চাকার রথ এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ ছিল। বলিহারের রাজাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। রাজা কৃষ্ণেন্দ্রনাথ রায় বাহাদুর একজন লেখক ছিলেন। তার লেখা গ্রন্থগুলোর মধ্যে কৃষ্ণেন্দ্র গ্রন্থাবলি ১ম ও ২য় খণ্ড অন্যতম। দেশ বিভাগের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে রাজা বিমলেন্দু রায় সপরিবার ভারতে চলে যান। এরপর বলিহার রাজবাড়ি দেখভাল করতেন রাজবাড়ির কর্মচারীরা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এবং পরে রাজবাড়ির বিভিন্ন নিদর্শন, আসবাবপত্র, দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুট হয়ে যায়। এরপর বেশ কিছুদিন রাজবাড়ির একটি ভবন বলিহার স্কুলের শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ হওয়ার পর স্কুলটি সেখানে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে বর্তমানে রাজবাড়িটি অব্যহৃত/পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। শুধু রাজবাড়ি চত্বরে অবস্থিত মন্দিরে স্থানীয়ভাবে পূজা-অর্চনা হয়ে আসছে। বর্তমানে রাজবাড়ির স্থাপনা যা এখনও টিকে রয়েছে এর মধ্যে রাজবাড়ির সামনে প্রকাণ্ড তোরণ, ভেতরের কম্পাউন্ডে প্রাচীন নাটমন্দির, রাজরাজেশ্বরী মন্দির, জোড়া শিবমন্দির আর বিশাল তিনতলা বিশিষ্ট প্রাসাদ রয়েছে।


২০২২ সালের ২৪ মার্চ সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এরপর গেজেট প্রকাশ করা হয়। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) স্বাক্ষরিত একটি পত্রে ‘বলিহার রাজবাড়ির’ ভূমির তফসিল জানতে চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক  কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রত্নস্থলের তফসিল জানতে চেয়ে পত্র প্রেরণ করেন। ভূমির তপসিল প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বরাবর গত ৩০ জানুয়ারি পত্র প্রেরণ করা হয় নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে। উল্লিখিত ভূমি তফসিলে বর্ণিত প্রত্নস্থাপনাটি ১৯৬৮ সালের পুরাকীর্তি আইন অনুসারে সংরক্ষণযোগ্য বিধায় সংরক্ষণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পুরাকীর্তি স্থলের জন্য ৩.৬৩ একর ভূমি জরিপের মাধ্যমের নির্ধারণ করা হয়।

কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু বলেন, গেজেট হাতে পাওয়ার পর প্রাচীন স্থাপনাটি সংরক্ষণের আওতায় অনা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে সাইন বোর্ড দেওয়া হয়েছে। স্থাপনাটি সংরক্ষণ ও সংস্কার করে পূর্বের আদলে ফিরিয়ে আনতে একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে এই কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে বলিহার রাজবাড়িটি পর্যটকদের কাছে অকর্ষণীয় করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা