সাতক্ষীরা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫৭ পিএম
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৯ পিএম
সুন্দরবনে জেলেদের জালে ধরা পড়ে ২৫ কেজি ওজনের জাভাভোল মাছ। প্রবা ফটো
পশ্চিম সুন্দরবনের গহীনে ধরা পড়া ২৫ কেজি ৩৬০ গ্রাম ওজনের একটি জাভাভোল মাছ ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বাগেরহাটের মোংলার বেলায়েত সরদার ২৩ হাজার টাকা কেজি দরে মাছটি কিনে নিয়েছেন।
সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী দাতিনাখালী এলাকার শুকুর আলী ও বাবুদের জালে মাছটি ধরা পড়ে। জাভাভোল মাছ ছাড়াও জেলেদের জালে ধরা পড়েছে লাউভোল ও জাতভোল মাছ। ইতোমধ্যে সেগুলো ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এর আগে সোমবার সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ এলাকার আবু মূসাসহ আরও কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী মাছটির দাম বলেন ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তবে বিক্রেতারা মাছের দাম চেয়েছিলেন সাড়ে ছয় লাখ টাকা।
জেলে বাবু বলেন, 'আমার জীবনে এই প্রথম এই জাভাভোল মাছ পেয়েছি। মাছটি পেয়ে আমারা খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু মাছ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দাম বেশি উঠেনি। বাইরে থেকে এই মাছ কিনতে পার্টি আসতে দিচ্ছে না স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা। সেজন্য সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি দাম উঠেনি। পরে সাংবাদিক রাজিব ভাইয়ের ফেইসবুক পোস্ট দেখে বেলায়েত সরদার ভাই ৭ লাখ টাকা মাছটি কিনে নিয়েছেন।'
জাভাভোল মাছের উচ্চমূল্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মাছ ব্যবসায়ী আবু বাক্কার বলেন, 'এই মাছের ফুলকোর দাম অনেক বেশি হওয়ায় মাছটির দাম বেশি।' তিনি আরও বলেন, 'এই মাছ থাইল্যান্ড, চায়নাসহ বিভিন্ন দেশে অনেক উচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়। এদেশের মানুষ এই মাছের ফুলকো দিয়ে স্যুপ বানিয়ে খায়। এই মাছটির ফুলকো ৭০০ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রাম হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।'
জেলে শুকুর আলী বলেন, 'সোমবার সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ বাজারে তুলেছিলাম, কয়েকজন দাম বলেছিলো সাড়ে ৩ লাখ টাকা। একটি সিন্ডিকেট চেয়েছিল যাতে মাছ বেশি দামে বিক্রি না হয়। পরে মোংলার বেলায়েত সরদার ভাই মাছটি ৭ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছেন। যে দাম পেয়েছি তাতে আমি খুশি।'
মাছ ক্রেতা বেলায়েত সরদার বলেন,' আমি সুন্দরবনে কাজ করি। সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালি ও মৌয়ালদের কষ্ট বুঝি। সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও বরগুনার পাথারঘাটার একটি সিন্ডিকেট কাজ করে সুন্দরবন এবং বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়া মাছ যাতে বেশি দামে বিক্রি না হয়। লাভ-ক্ষতি যাই হোক আমি সেই সিন্ডিকেট ভেঙে দিলাম। ২৫ কেজি ৩৬০ গ্রাম মাছটি ৭ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'এই মাছের ফুলকোর অনেক দাম। বিভিন্নভাবে জেনেছি এই মাছ ওষুধ তৈরি করা হয়। এই মাছের স্যুপ তৈরী হয়। সেটা অনেক দামে বিক্রি হয়। এই মাছটি কত দামে বিক্রি হয় সেটা এখন বলতে পারছি না। তবে এটি দামে বিক্রি হওয়া মাছ। আশা করছি মাছটি বিক্রি করে কিছু টাকা লাভ হবে।'