কক্সবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৮ পিএম
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩৩ পিএম
মিয়ানমার থেকে অস্ত্রসহ অনুপ্রবেশকারি ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ১১ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। প্রবা ফটো
মিয়ানমার থেকে অস্ত্রসহ অনুপ্রবেশকারী সেই ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রথম দফায় ১১ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে তাদেরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উখিয়ার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাছির উদ্দিন মজুমদার জানান, এই ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারের পাঠানো হবে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আরও ১১ রোহিঙ্গাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে।
অনুপ্রবেশকারী ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ২২ জনের ৩ দিন করে গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রিমান্ড দেন কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা। গ্রেপ্তারের পর কারাগারে থাকা মো. সাদেক নামের এক রোহিঙ্গা অসুস্থ হওয়ায় তার রিমান্ড দেননি আদালত।
মিয়ানমারে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সংঘাতের মধ্যে ৬ ফেব্রুয়ারি পালিয়ে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্যের পাশাপাশি অস্ত্রসহ ২৩ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে ৯ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র আইনে মামলা করেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম। পরে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবির নায়েক সুবেদার মো. শহিদুল ইসলামের করা অস্ত্র এজাহারে ২৩ জনের নাম, ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। তারা হলেন– উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর ক্যাম্পের মৃত কবির আহমদের ছেলে মো. হোসেন আহমদ, একই ক্যাম্পের মো. ইউনুসের ছেলে মো. রফিক, আ. রাজ্জাকের ছেলে আয়াতুল্লাহ, ৯ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিকের ছেলে মো. জুনাইদ, একই ক্যাম্পের নুর কালামের ছেলে মো. হারুন, সমসের আলমের ছেলে মো. কায়সার, রশিদ আহমেদের ছেলে মো. সাবের, ১০ নম্বর ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছেলে ওসামা, একই ক্যাম্পের জাফর আলমের ছেলে ওমর ফারুক, মো. তোহার ছেলে মো. সাদেক, মকবুল আহমদের ছেলে হারুন অর রশিদ, হামিদ হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত, দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. ইসমাইল, মো. হোসেনের ছেলে মো. রহিম, ১১ নম্বর ক্যাম্পের আতা উল্লাহর ছেলে নজু মোল্লা, ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. সৈয়দের ছেলে সৈয়দ উল্লাহ, একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে হাফেজ আহমেদ, ২০ নম্বর ক্যাম্পের মো. রশিদের ছেলে মো. জোবায়ের, কুতুপালং এলাকার ৬ নম্বর ক্যাম্পের ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহ, একই এলাকার ৩ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসেমের ছেলে এনামুল হাসান, ২ ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে মো. রফিক, একই ক্যাম্পের মৃত আবুল কালামের ছেলে সৈয়দুল ইসলাম এবং ৭ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মো. জলিলের ছেলে মো. আরমান।
গ্রেপ্তারের সময় ২৩ রোহিঙ্গার কাছ থেকে ১২টি অস্ত্র ও ৮ শতাধিক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে এসএমজি ৫টি, জি-৩ রাইফেল ১টি, পিস্তল ২টি, রিভলভার ৪টি। গুলির মধ্যে রয়েছে এসএমজি গুলি ১৯৮ রাউন্ড, এমজি গুলি ৯৮ রাউন্ড, রাইফেলের গুলি ২৭৬ রাউন্ড, জি-৩ রাইফেলের গুলি ১০৩ রাউন্ড, পিস্তলের গুলি ১৯৩ রাউন্ড, পিস্তলের ব্যাংক কার্তুজ ২৫ রাউন্ড, রাইফেলের গ্রেনেড ফিউজ ৫ রাউন্ড, এসএমজি ম্যাগাজিন ৬টি, এলএমজি ম্যাগাজিন ৪টি, জি-৩ ম্যাগাজিন ১টি, পিস্তল ম্যাগাজিন ২টি।
উখিয়ার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাছির উদ্দিন মজুমদার জানান, এই ২৩ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালংয়ের বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা। স্বাভাবিক কারণে ক্যাম্প ছেড়ে এসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারে যাওয়ার কথা না। কিন্তু কি কারণে মিয়ানমারে গেল, তাদের হাতে অস্ত্র কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া জরুরি। তিন দিনের রিমান্ড শেষে প্রয়োজনে আবার রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হবে।