তালা (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৪৮ পিএম
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৫৮ পিএম
আইন অমান্য করে প্রকাশ্যে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। প্রবা ফটো
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় আইন অমান্য করে প্রকাশ্যে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন রফিকুল ইসলাম নামে একজন আওয়ামী লীগ নেতা। এই মাটি ভারী ট্রাকে বহন করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অন্য কৃষকদের ফসলি জমি ও গ্রামীণ রাস্তা। অনেক রাস্তা ইতোমধ্যেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এক কিলোমিটার দূরে লাড়িপাড়া গ্রামে কায়েমখোলা বিলের তিন ফসলি জমির উর্বর মাটি এক্সকাভেটর দিয়ে কেটে ডাম্পার ট্রাকে ওঠানো হচ্ছে। প্রায় ২০টি ডাম্পার ট্রাক মাটিগুলো প্রায় তিন কিলোমিটার গ্রামীণ পিচের রাস্তা দিয়ে বহন করে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। এতে করে কুমিরা কাউন্সিল মোড় থেকে লাড়িপাড়া মোড় পর্যন্ত রাস্তার পিচ উঠে ধুলাবালিতে জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।এ রাস্তায় চলাচলকারী ভ্যানচালক সিদ্দিক মিয়া বলেন, ‘নেতাগোতাদের কাজ। কিছু বললে তো মার খেতে হবেনে।’ এই রাস্তার পাশে একটি মুদিদোকান চালান সজল দত্ত নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। রাস্তার সব পিচ উঠে গেছে। ধুলোবালি এত বেশি যে দিনের বেলা দোকান খুলতে পারছি না।’
এসব থোড়াই কেয়ার করেন কুমিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। তিনি মাটি বিক্রির কথা সদম্ভে স্বীকার করেন। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘আমি মাছের ঘের করব বলে নিজের জমি থেকে মাটি কেটে কয়েকটি ভাটায় বিক্রি করেছি। আর রাস্তার সমস্যা হলে আমি সেটা মেরামত করে দেব।
তিনি নিজের জমির কথা বললেও এলাকাবাসীর বক্তব্য ভিন্ন। লাড়িপাড়া গ্রামের কৃষক জনাব আলী শেখ ও শহিদুল মোল্লাসহ অনেকেই জানিয়েছেন, ‘স্থানীয় আতিয়ার হাজাম পাঁচ বিঘা জমির মাটি কেটে বিক্রি করেছে। রফিকুল ও শফিকুল দুই ভাই প্রায় ২০ বিঘা জমির মাটি কেটে বিক্রি করেছে।’ শহিদুল আরও বলেন, ‘আমরা তো চুনোপুঁটি। তারা নেতাগোতা। যা করবে তাই মেনে নিতে হবে।’
আইন অনুযায়ী, কৃষিজমির টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে। এ কাজে জড়িতদের দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আবার গ্রামীণ সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী, উপজেলা সড়ক ও ইউনিয়ন সড়কে ৮ টন ও গ্রামীণ সড়কে ৫ টন লোডের অধিক পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আফিয়া শারমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছেন। সহকারী কমিশনার বলছেন, তিনি তহসিলদারকে নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী রথীন্দ্র রায় এলাকাবাসীর অভিযোগের অপেক্ষায় আছেন। আর জেলা পরিবেশ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামও বলছেন, তিনি ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন।