× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মোহনগঞ্জ

বাঁধের মাটি কেটে বাঁধ মেরামত!

হাফিজুর রহমান চয়ন, হাওরাঞ্চল (নেত্রকোণা)

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫৯ পিএম

আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:০৩ পিএম

মোহনগঞ্জের চরহাইজদা ফসলরক্ষা বাঁধের গোড়া থেকেই তোলা হচ্ছে মাটি। প্রবা ফটো

মোহনগঞ্জের চরহাইজদা ফসলরক্ষা বাঁধের গোড়া থেকেই তোলা হচ্ছে মাটি। প্রবা ফটো

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার চরহাইজদা ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে গঠিত ১৭ নম্বর প্রকল্পের পিআইসির সভাপতি মো. কুতুবউদ্দিন। তিনি জুক্কা নামক স্থানে মূল বাঁধের পাশে থেকেই মাটি কেটে মেরামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে চলতি বোরো মৌসুমে আগাম বন্যায় বাঁধ ভেঙে হাওরে থাকা বছরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এ ছাড়া পিআইসি গঠনেও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশঙ্কা রয়েছে নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ করা নিয়েও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঁধ নির্মাণে মো. কুতুবউদ্দিন পাউবোর নীতিমালা মানছেন না। তিনি নিজের ইচ্ছামতো এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে বাঁধের গোড়া থেকেই মাটি কেটে মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকদের অভিযোগ, গত বছর হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধগুলো টেকসইভাবে নির্মাণ ও মেরামত করায় ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এবার টাকার বিনিময়ে হাওরে জমি নেই এমন অনভিজ্ঞ ও সুবিধাবাদী লোকদেরকে পিআইসি করায় তারা নীতিমালা না মেনেই এভাবে বাঁধের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জের চরহাইজদা নামক একমাত্র ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামত কাজে স্থানীয়ভাবে ২৬টি পিআইসি গঠন করা হয়। আর এসব কমিটির বিপরীতে পাউবো থেকে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নীতিমালা অনুযায়ী ওইসব প্রকল্পের কাজ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে তা চলতি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা। 

সরেজমিন দেখা গেছে, কমিটি বাঁধের অর্ধেক কাজও সম্পন্ন করতে পারেনি। এ ছাড়া পাউবোর বেঁধে দেওয়া নীতিমালা অনুযায়ী মূল বাঁধের অন্তত ১০০ ফুট দূরে মাটি কাটার কথা। কিন্তু জুক্কা বাঁধের ১৭ পিআইসিসহ অনেকেই তা মানছেন না। তারা বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে বাঁধ উঁচু করছেন। আবার অনেকেই মাটির বদলে বালু দিয়ে বাঁধ মেরামত কাজ করছেন।

হাইজদা হাওরের কৃষক আখতুরুজ্জামান পিয়াস বলেন, ‘হাইজদা হাওরের আমাদের প্রায় ৩৫০ কাঠা বোরো জমি রয়েছে। হাওররক্ষা বাঁধটিও আমাদের জমির ওপর দিয়েই করা হয়েছে। কিন্তু হাওরে যাদের কোনো জমি নেই এমন লোকদেরকে পিআইসি করে বাঁধের কাজ করানো হচ্ছে। তাই বাঁধের কাজে অনিয়ম হওয়াটাই স্বাভাবিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যেক এলাকায় গিয়ে স্থানীয় কৃষক, জনপ্রতিনিধিসহ গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গণশুনানির মাধ্যমে পিআইসি গঠনের কথা। এ বিষয়ে আমাদের মতো কৃষকদেরকে কিছুই জানানো হয়নি।’

ডিঙ্গাপোতা হাওর পাড়ের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক লিটন তালুকদার বলেন, ‘হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামত কাজে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে এলাকার একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেট চক্রের অনেকেই পিআইসির সভাপতি হয়েছে। বারবার একই ব্যক্তিদেরকে পিআইসি করা হচ্ছে। তাদের হাওরে কোনো জমিও নেই। স্বাভাবিকভাবেই বাঁধের প্রতি তাদের দরদও নেই। এজন্যেই যেনতেনভাবে বাঁধ মেরামত কাজ করে বরাদ্দের টাকা মারার ধান্দা করছেন। এভাবে কাজ করা হলে বছরের শুরুতেই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে আমাদের সারা বছরের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।’

অভিযুক্ত মো. কুতুবউদ্দিন বলেন, ‘আমি কিছু সময় প্রকল্প এলাকায় ছিলাম না। এ সুযোগে ভেকুর (এক্সকাভেটর) চালক বাঁধের গোড়া থেকে কিছু মাটি কেটেছে। তবে খুব শিগগিরই দূর থেকে মাটি এনে ওই গর্তটি ভরাট করা হবে।’

বাঁধের কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা নেত্রকোণা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘বাঁধের কাছের ওই গর্তটি দ্রুত ভরাট করার জন্য বলা হয়েছে।’ টাকার বিনিময়ে পিআইসি করার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি কোনো নেতাকে টাকা দিয়ে থাকেন, সেটি আমাদের দেখার বিষয় না।’

উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভাপতি উপেজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘বাঁধের গোড়া কেটে বাঁধে ফেলছে, এমনটি হতে পারে না। দ্রুতই ওই বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা