পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৩০ পিএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৩৯ পিএম
পঞ্চগড়ের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া সেই দুটি বন্য হাতি ভারতে ফিরে গেছে। ফাইল ফটো
পঞ্চগড়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা দুই বন্য হাতি ভারতে ফিরে গেছে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে হাতি দুটি বাংলাবান্ধা কাশিমগঞ্জ সীমান্ত পিলার ৭৩০ এর নিকটবর্তী বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ফাঁসি দেওয়া ক্যাম্পের (বিপরীতে ১৮ বিজিবি গোয়ালগছ ক্যাম্প) এলাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। হাতিগুলো ফিরে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মনে স্বস্তি ফিরেছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেতুঁলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি।
তিনি বলেন, ভারতীয় বন বিভাগের হাতি উদ্ধারের বিশেষজ্ঞ দল, বিএসএফ ও বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে আগত বন বিভাগের চার সদস্যর একটি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ দল, পঞ্চগড় বন বিভাগের সদস্যরা, তেতুঁলিয়া উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও বিজিবির সমন্বিত সহযোগিতায় হাতি দুটি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সবার চেষ্টায় হাতি দুটিকে ভারতে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। ওই এলাকা বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ফজলে রাব্বি বলেন, ‘ভারতীয় ফরেস্ট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, হাতি দুটি ভারতের সীমান্ত এলাকা থেকে ১০ কিলোমিটার ভেতরে একটি জঙ্গলের দিকে চলে গেছে। বর্তমানে আমরা শঙ্কামুক্ত রয়েছি। তবে একজন মানুষকে আমরা হারালাম। আমরা পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি এবং তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখছি।’
পঞ্চগড় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক নূরুন্নাহার বলেন, ‘রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির, ফরেস্টার ইউসুফ আলী, গোলাম কবির, জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট সোহেল রানাসহ পাঁচ সদস্যের একটি দল এবং তেতুঁলিয়া বনবিভাগের সদস্যরা এখনও দক্ষিণ কাশিমগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় কাজ করছেন। আর যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেজন্য তারা তৎপর রয়েছেন।’
স্থানীয়রা জানান, হাতি দুটি বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের কাশিমগঞ্জ থেকে ভারতে চলে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক কেটে স্বস্তি ফিরেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয়রা খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এজন্য বিজিবি, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় কাশিমগঞ্জ সীমান্ত এলাকার ৭৩০ পিলারে বাংলাদেশ ও ভারতীয় বনবিভাগের প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধনের জন্য পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশে আসা হাতি দুটি ভারতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের বনবিভাগের সদস্যদের সঙ্গে ভারতীয় বনবিভাগ বিভাগের সদস্যদের আলোচনা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে হাতির ধাক্কায় নুরুজ্জামান নামের এক কিশোর গুরুতর আহত হয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টার পর পঞ্চগড় জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে মারা যায় সে।
বিজিবি, বিএসএফ ও উভয় দেশের বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সীমান্ত পিলার ৭৩০ দিয়ে হাতি দুটি ফাঁসি দেওয়া সীমান্তে প্রবেশ করে ভারতে চলে যায়। বিজিবিকে তথ্যটি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ নিশ্চিত করে।