শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৪১ পিএম
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:২৩ পিএম
বড়হর কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রবা ফটো
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুই মাসে চার কমিউনিটি ক্লিনিকে সাতবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রত্যেকবারই ক্লিনিক থেকে ফ্যান, সৌর প্যানেলের ব্যাটারি, ওষুধসহ নগদ অর্থ চুরি হয়েছে।
চুরির ঘটনার শিকার ক্লিনিকগুলো হলো উপজেলার আড়ালিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক, বরুণ কমিউনিটি ক্লিনিক, ডেফুলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক এবং বড়হর কমিউনিটি ক্লিনিক।
চুরির বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইডজ হেল্থ লাইন পরিচালক কাইয়ুম তালুকদার বলেন, আমি ক্লিনিকে চুরির অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখব। কমিউনিটি ক্লিনিক দেখাশোনা করার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চুরির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আড়ালিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মোহাম্মদ কামাল হোসাইন বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি বেলা ৩টায় ক্লিনিকে তালা লাগিয়ে বের হই। পরের দিন সকালে গিয়ে দেখি দুটি কক্ষের তালা ভেঙে দুটি ফ্যান, একটি ব্যাটারিসহ ওষুধ ও নগদ টাকা চুরি হয়ে গেছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরেও এ ধরনের চুরি হয়েছিল। এসব ঘটনায় আমি থানা, স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পরও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে যাওয়ার কথা ভাবছি।
ডেফুলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) রায়হান রানা বলেন, গত ১১ জানুয়ারি সকাল ৯টায় অফিসে আসি। এ সময় বাইরে তালা দেখতে পাইনি। কক্ষের ভিতরের তালাগুলো ভাঙা এবং গেট খোলা ছিল। ভিতরে প্রবেশ করে দেখি তিনটি ফ্যান, দুটি ব্যাটরি এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ চুরি হয়ে গেছে। এক মাসের রোগী দেখার সব টাকাও চুরি করে নিয়ে গেছে।
বরুন কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) ফাহিদা আক্তার জানান, গত ৩ জানুয়ারি ক্লিনিক থেকে তিনটি ফ্যান, দুইটি ব্যাটারি, ওষুধ এবং নগদ টাকা চুরি হয়েছে।
বড়হর কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মাহবুবুল আলম শরীফ বলেন, গত দুই মাসে তিনবার চুরি হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে ক্লিনিকের সৌর প্যানেলের ২৪টি ব্যাটারির মধ্যে ৬টি ব্যাটারি, নগদ টাকা ও ওষুধ চুরি হয়েছে। একই মাসে আবারও ৬টি সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারিসহ নগদ টাকা এবং ওষুধ চুরি হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি দুটি ফ্যান ও রোগীদের জন্য বরাদ্দ পানির পাম্প চুরি হয়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রহমান বলেন, তালার আংটা কেটে এসব চুরি সংঘটিত হয়েছে। এ ধরনের চুরি সংঘটিত হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আজিজুর রহমান বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে কী থাকে? এতবার চুরি হয়! যারা ব্যাটারি কেনে তাদের ধরতে হবে!
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুরির অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন কাপাসিয়ার ইউএনও মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী।