বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:০৫ পিএম
বোয়ালমারী উপজেলায় কুমার নদে গঙ্গাস্নান করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। প্রবা ফটো
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় হাজার বছর ধরে চলা মাঘী পূর্ণিমার গঙ্গাস্নানে দেশ-বিদেশের লক্ষাধিক পূর্ণ্যার্থী যোগ দিয়েছেন। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের জয়নগর কয়ড়া কালীবাড়ি মন্দিরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কুমার নদে এ গঙ্গাস্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শুরু হওয়া এ গঙ্গাস্নান চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সনাতন ধর্মাবলম্বী হাজার হাজার পূর্ণ্যার্থী নারী-পুরুষ পাপমোচনের জন্য গঙ্গাস্নান করে থাকে। মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে প্রতি বছর কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি পূণ্যার্থী এ গঙ্গাস্নানে অংশ নেয়।
এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলার দূর-দূরান্ত থেকে মাতুয়া সম্প্রদায়ের নারী পুরুষরা ঢাকঢোল বাজিয়ে উপস্থিত হয়ে থাকে।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি থেকে আগত মতুয়া সম্প্রদায়ের একজন ভক্ত বলেন, ‘এটি হাজার বছরের প্রাচীন জাগরত মা কালির মন্দির। এই তীর্থস্থান ঘেঁষে বয়ে যাওয়া গঙ্গা দেবীর পবিত্র জলে মাঘ মাসের এই পূর্ণ্যতীথিতে প্রতি বছর স্বপরিবারে স্নান করে নিজেদের পাপ মোচন করি। আমাদের গ্রামের দলটি এখানে আসতে একদিন আগে রওনা হয়।’
উপজেলা সদর থেকে আগত প্রভাষক বিকাশ রঞ্জন বলেন, ‘পূর্বপুরুষের তীর্থ শ্রীশ্রী কয়ড়া কালীবাড়িতে প্রতি বছরই দেবী মায়ের আশীর্বাদ ও পায়ে পুষ্পাঞ্জলি দিতে আসি।’
কয়ড়া কালীবাড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি বাবু সুবাস সাহা বলেন, ‘সনাতন ধর্ম-বিশ্বাসীরা শত শত বছর ধরে এখানে গঙ্গাস্নান ও পূণ্য সঞ্চয়ের জন্য মায়ের পায়ে পূজা, বলি ও গঙ্গাস্নানে করতে আসে। এ বছরও ভারত ও নেপাল থেকে ভক্তরা গঙ্গাস্নানে অংশ নিয়েছেন। আমরা ভক্তদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর।’
থানার পুলিশ পরিদর্শক আবুল বাসার জানান, গঙ্গাস্নান ও মেলা উপলক্ষে আগত পূণ্যার্থীদের যাতে কোনও প্রকার সমস্যা না হয় সে দিকে নজর রাখা হয়েছে। এ লক্ষ্যে জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং মেলা, মন্দির, ঘাট ও আশপাশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।’
এদিকে গঙ্গাস্নান উপলক্ষে মন্দির ঘেঁষা খোলা মাঠে বসেছে সপ্তাহব্যাপী গ্রামীণ মেলা। নানাপদ মিষ্টি, খাবার হোটেল, মাটি ও বেতের তৈরি গৃহস্থালির দোকান, খেলনা, প্রসাধনী, মসলার দোকানের পাশাপাশি কাঠের তৈরি ফার্নিচারসামগ্রীর দোকানপাটও বসেছে।