× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তিন বছরে জনবল ছাড়া সবই বেড়েছে

ভুবন সেন, খানসামা (দিনাজপুর)

প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১০ এএম

খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রবা ফটো

খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রবা ফটো

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় ২০২১ সালে। কিন্তু এজন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তিন বছর ধরে হাসপাতালটি চলছে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। জনবল সংকটের কারণে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা অনুযায়ী যে জনবল নিয়োগ দেওয়ার কথা, তা দেওয়া হয়নি। ফলে ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। আবার সেই ৩১ শয্যার জনবলের মধ্যেই অনেক পদ শূন্য। চারজন জুনিয়র কনসালটেন্টের স্থলে রয়েছে মাত্র দুজন। ইউনানিসহ পাঁচজন চিকিৎসা কর্মকর্তার স্থলে আছেন তিনজন। 

উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের ৬টি পদের মধ্যে ৩টি পদ শূন্য। এ ছাড়া সিনিয়র স্টাফ নার্সের ৩০টি পদের মধ্যে ৫টি, আর স্বাস্থ্য সহকারী ২৫টি মধ্যে ৯টি শূন্য রয়েছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শকের ২টি পদে কোনো জনবল নেই। সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরও ৫টি পদের মধ্যে ২টি শূন্য। দুজন অফিস সহকারীর স্থলে রয়েছেন একজন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ৫টি পদের মধ্যে ১টি শূন্য, নিরাপত্তা প্রহরীর ২টি পদই শূন্য। ৫ জন এমএলএসএসের বিপরীতে রয়েছেন ৩ জন। দুজন আয়ার বিপরীতে রয়েছেন একজন। এ ছাড়া ডেন্টিস্ট প্রেষণে থাকায় অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে ডেন্টাল ইউনিটের যন্ত্রপাতি। তবে আলট্রাসনোগ্রাফি, এক্স-রেসহ বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল সেবা চালু রয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে খানসামা উপজেলা ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উপজেলার মধ্যবর্তী পাকেরহাটে অবস্থিত। পুরো উপজেলার বাসিন্দাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসার ভরসা এটি। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে সীমিত জনবল নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে কর্তৃপক্ষ। জনবল সংকট থাকা সত্ত্বেও আউটডোর, ইনডোর, ইমারজেন্সি, অবস্থানরত রোগীদের সেবা, নরমাল ডেলিভারি, সিজারিয়ান অপারেশন, এএনসি, পিএনসি সেবা দিয়ে রোগীদের আস্থা অর্জন করেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানিয়েছে, গেল বছর প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আউটডোরে ৮১ হাজার ৫২০ জন, ইনডোরে ৯ হাজার ৬৫৫ জন, ইমারজেন্সি ২৫ হাজার ৬১৫ জন, হাসপাতালে অবস্থানরত রোগী ২২ হাজার ১০৯ জন, এএনসি সেবা ১৩ হাজার ৭৩৭ জন, পিএনসি সেবা দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ৩৫৫ জন রোগীকে। এ ছাড়া ১ হাজার ১৫৬ প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি ও ২৫৬টি সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীর স্বজনরা চিকিৎসাসেবা পেয়ে খুশি। তারা বলছেন, এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত। তাদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য উপজেলার একমাত্র ভরসা এই হাসপাতাল। আউটডোরে সেবা নিতে আসা ফাতেমা আক্তার নামে একজন বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ বাবা। বাইরত যায়া (বাইরে গিয়ে) চিকিৎসা করার মতোন টাকা হামার নাই। অসুখ হলে এইঠে আসি ডাক্তার দ্যাখে ফ্রি ওষুধ নিয়া যাই। আইজও ডাক্তার দ্যাখে ওষুধ নিনু।’

প্রসূতি সেবা নিতে আসা আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র ভরসা এই হাসপাতাল। গর্ভকালীন সময়েও প্রয়োজনীয় সুবিধা হাসপাতালে পেয়েছি। দ্বিতীয়বারের মতো এখানে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে।’

ফারজানা আক্তার নামে আরেকজন বলেন, ‘এখন সব রোগীকে চিকিৎসার জন্য রংপুর-দিনাজপুর যেতে হয় না। পাঁচ টাকা টিকিটের বিনিময়ে ডাক্তারের পরামর্শসহ বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়া যায়।’

তবে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, ‘সীমিত জনবল নিয়েই রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কাজ করছি। এক্ষেত্রে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মলয় কুমার কুণ্ডু বলেন, ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই ৫০ শয্যার কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে আবার ৩১ শয্যার জনবলেও বেশ কিছু পদ শূন্য। এই সীমিত জনবল নিয়েও আমরা সাধ্যমতো স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি। জনবল নিয়োগের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জনবল নিয়োগের কার্যক্রম চলমান আছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজউদ্দিন বলেন, জনবল সংকটের মধ্যেও উপজেলা পর্যায়ের এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সাধারণ রোগীর নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হয়ে উঠেছে। মাননীয় অর্থমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা, কর্মরত চিকিৎসকসহ সকলের সহযোগিতায় মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা