পেট্রোল ঢেলে আগুন
নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৫ পিএম
আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৯ পিএম
সাবেক স্বামী খলিলুর রহমানের সঙ্গে লতা আক্তার। প্রবা ফাইল ফটো
নরসিংদীর রায়পুরায় তালাক দেওয়ায় নিজের ও চিকিৎসক স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্ত্রীও চলে গেলেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চিকিৎসক লতা আক্তার। একই ঘটনায় দুদিন আগে এ হাসপাতালেই মারা যান তার সাবেক স্বামী খলিলুর রহমান।
লতা আক্তারের চাচা ফারুক মিয়া বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে লতার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লতা জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়ন ব্রাহ্মণেরটেক গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে। শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন তিনি। আর খলিলুর গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার বেলাশী গ্রামের আতর আলী বেপারীর ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, চিকিৎসক লতা আক্তারকে দুই বছর আগে বিয়ে করেন খলিলুর রহমান। বিয়ের পর লতা জানতে পারেন খলিল পেশায় গাড়িচালক। বিষয়টি লতা মেনে নিতে পারেননি। প্রতারণার অভিযোগে দুই মাস আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান লতা। তবে সেটি মেনে নিতে পারেননি খলিলুর। তিনি লতাকে নিয়ে সংসার করতে চান।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সালিশও হয়। সালিশেও খলিলুরের সঙ্গে সংসার করবেন না বলে জানান লতা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত রবিবার মরজালে লতাদের বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে পেট্রোল দিয়ে নিজের ও লতার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন খলিল।
এ সময় ডাক-চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন দরজা ভেঙে দগ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। লতাকে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ও খলিলকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সেখান থেকে দুজনকেই শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। পরদিন সোমবার দুপুরের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খলিলুর মারা যান। আজ চলে গেলেন লতাও।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘খবর পেলাম ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় লতার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগুন দেওয়ার ঘটনার পর পর লতার পরিবারের পক্ষ থেকে খলিলুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল।’
ঘটনার পর খলিলুরের ভাই মফিজুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেছিলেন, ‘কথা কাটাকাটির মধ্যে উত্তেজিত হয়ে খলিলুর ও লতা নিজেরাই নিজেদের শরীরে আগুন দিয়েছে। আমার ভাইয়ের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।’