× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পঞ্চগড়ে বলাৎকারের মামলায় মাদ্রাসাশিক্ষক গ্রেপ্তার

পঞ্চগড় প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫১ পিএম

আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:২৭ পিএম

অভিযুক্ত মিজানুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

অভিযুক্ত মিজানুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক মাদ্রাসার তিন ছাত্রকে বলাৎকারের মামলায় মিজানুর রহমান নামে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার হওয়া মাদ্রাসাশিক্ষক মিজানুর রহমানের বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ গোড় গ্রামে। তিনি দেবীগঞ্জ পৌরসভার মুন্সীপাড়া-কামাতপাড়া এলাকায় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

ওসি ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, ‘বলাৎকারের শিকার এক মাদ্রাসাছাত্রের বাবা বাদী হয়ে মিজানুর রহমানকে আসামি করে বুধবার রাতে দেবীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ওই মামলায় তাকে ওই রাতেই উপজেলার পৌরসভার একটি মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বিকালে তাকে আদালতে তোলা হয়েছে।’

দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বলাৎকারের শিকার মাদ্রাসাছাত্ররা ২২ ধারায় পুলিশের জবানবন্দি দিয়েছে। এর মধ্যে একজনকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দুজনকেও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হবে। এ ছাড়া বলাৎকারের শিকার অপর দুই ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে একই আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।‘ 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে তিনজন ছাত্রকে বিভিন্ন সময়ে নিজ শয়নকক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করেন শিক্ষক মিজানুর রহমান। এ ছাড়া একই সময়ে আরও তিন ছাত্রকে তিনি নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নিজের শরীর টেপানো, গোপন অঙ্গ ম্যাসেজসহ যৌন নিপীড়ন করেছেন। এ নিয়ে ছাত্রদের পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বলাৎকারের অভিযোগ পায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পরে বুধবার বিকালে এক জরুরি সভা ডাকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়।

এদিকে চাকরিচ্যুত হয়েও জনরোষের ভয়ে ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় অবস্থান করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে অভিভাবক ও স্থানীয়রা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। অভিভাবক ও স্থানীয়রা অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বুধবার রাত পৌনে ৮টায় মাদ্রাসাটিতে উপস্থিত হয়। পরে বিষয়টি বেগতিক দেখে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

দুই বছর আগেও এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠে এই মাদ্রাসাশিক্ষকের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ছাত্রদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধর করে তিনি এই অপকর্ম করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই প্রধান বলেন, ‘মাদ্রাসাটি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যবস্থায় পাঠদান চালু করা হয়। শুরু থেকে আমরা মাদ্রাসায় মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করি। তবে যেসব ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ এনেছে শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে, তারা সবাই গোপনে মোবাইল ব্যবহার করত। পরে বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের নজরে এলে তিনি তাদের নিষেধ করেন। তবে ছাত্ররা সেই রেষ থেকে তাদের অভিভাবকের কাছে বলাৎকারের বিষয়টি নিয়ে নাটক সাজায়। যদিও ছাত্রদের অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা প্রধান শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছি। কিন্তু অল্প সময়ে ঘটনার প্রমাণ বের করা সম্ভব হয়নি। এরপরেও অভিভাবকরা মাদ্রাসাটি ভাঙচুর করতে আসেন। হুজুরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। একজন হুজুরকে এভাবে অপমান করা ঠিক না।’

ওসি ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, ‘বর্তমানে মাদ্রাসা এলাকা শান্ত রয়েছে। মাদ্রাসাটি কয়েক দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে, আর দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমরা ছাত্রদের জবানবন্দি নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে একজনকে পাঠিয়েছি। অপর দুজনকেও পাঠানো হবে। বলাৎকারের অভিযোগটির প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা