ভাসানচরে গ্যাস থেকে অগ্নিকাণ্ড
নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪ ১৩:০৭ পিএম
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৪ ১৪:২৪ পিএম
ভাসানচর থানা। প্রবা ফটো
সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নয়, নতুন সিলিন্ডার পেতে পুরান সিলিন্ডারের গ্যাস বাতাসে ছাড়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটেছিল অগ্নিকাণ্ড। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শুক্রবার (১ মার্চ) তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
তিনি বলেন, ভাসানচরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটেনি। সিলিন্ডারের গ্যাস ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেওয়ায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মাঝে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের তারিখ ছিল। এর আগের দিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের সফি আলম নতুন সিলিন্ডার নিতে তার ব্যবহৃত সিলিন্ডারের তলানিতে থেকে যাওয়া গ্যাস ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেন। এ সময় পাশের কক্ষের আবদুস শুক্কুরের স্ত্রী আমিনা খাতুন এবং অন্য কক্ষে আবদুল হাকিমের মেয়ে শমসিদা গ্যাসের চুলায় আগুন দেন। এতে সফি আলমের ছেড়ে দেওয়া গ্যাস বাতাসে মিশে তাদের ৩, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর কক্ষে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে পাঁচটি কক্ষে ও সামনের বারান্দায় আগুন ধরে যায়। আর তখন পাঁচ শিশুসহ নয়জন দগ্ধ হয়।
দগ্ধ পাঁচ শিশুই মারা গেছে। দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূঁইয়া বলেন, গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয়ে পাঁচ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল থানায় একটি মামলা হয়েছে। উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ নূর বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। মামলায় সফি আলমকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি নিজেই অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় তাকে আপাতত গ্রেপ্তার না করে পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে তার দুই শিশু সন্তান মারা গেছে। তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভাসানচর হাসপাতালে এনে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে আদালতে পাঠানো হবে।
ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের (আরআরআরসি) উপসচিব মো. মাহফুজের রহমান বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা এরই মধ্যে প্রতিটি ক্লাস্টারের গ্যাসের সিলিন্ডার ও চুলার ব্যবহারে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছি। যার অংশ হিসেবে ক্লাস্টারে বসবাসকারীদের নিয়ে সচেতনতামূলক বৈঠক, মসজিদের মাইকে সচেতনতামূলক ঘোষণা প্রচার করা হয়েছে।’