× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শেষ মুহূর্তে জমজমাট বেচাকেনা চট্টগ্রামের বইমেলায়

সুবল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪ ২০:০৩ পিএম

শেষ মুহূর্তে জমজমাট বেচাকেনা চট্টগ্রামের বইমেলায়

চট্টগ্রামের ফুসফুসখ্যাত সিআরবি শিরীষতলা। সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় গিয়ে দেখা গেছে বইপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়। নারী-পুরুষের পাশাপাশি নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনের সঙ্গে এসেছিল নানা বয়সী শিশুরাও। শেষ মুহূর্তের বইমেলায় এখন বাজছে বিদায়ের সুর। আর প্রকৃত বইপ্রেমীরাও এবার দেদার বই কিনছেন বলে জানান বিক্রেতারা।  

বিকেল ৪টার দিকে বইমেলার প্রজ্ঞালোক প্রকাশনীর স্টলে কথা হয় নাইমুল আবেদীন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি পটিয়া থেকে দ্বিতীয়বারের মতো বইমেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে একদিন এসে বই দেখে গিয়েছিলাম। এখন যেহেতু মেলা শেষ দিকে, তাই আজ বন্ধের দিন কিছু বই কিনতে এসেছি। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ও শিশুতোষ বই আমার বেশ প্রিয়। তাই বেশ কয়েকটি এসব বই কিনেছি।’ এবারের বইমেলা প্রসঙ্গে নাইমুল বলেন, ‘আমার কাছে এবারের বইমেলা গতবারের চেয়েও গোছানো মনে হয়েছে। তবে চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকাসহ সারাদেশের প্রকাশনী সংস্থা আরো বাড়ানো গেলে ভালো হবে।’

প্রথমা স্টলের গিয়ে দেখা যায়, আনিসুল হকের উপন্যাস ‘কখনো আমার মাকে’ বইটি কিনে ব্যাগে ঢোকাচ্ছিলেন রায়হান উদ্দিন নামে এক ক্রেতা। তিনি কথা প্রসঙ্গে বলেন, ড. সন্দীপক মল্লিকের প্রবন্ধের বই ‘অলঙ্কৃত অভিজ্ঞান ও অন্যান্য’, শারুদ নিজামের ‘নিঃশব্দ চোখে’, হৃদয় হাসান বাবুর উপন্যাস ‘তুমি তো সেই’, মোজাফ্ফর হোসেনের ‘নো ওম্যান’স ল্যান্ড’, কিঙ্কর আহসানের ‘ইনসান’সহ আরো বেশ কিছু বই কিনলাম। আসলে বই পড়লে আমার মনে ভীষণ রকমের ভালো লাগা কাজ করে। গত তিন সপ্তাহে আমি প্রায় প্রতিদিনই বইমেলায় এসেছি।’

আদিগন্ত প্রকাশনের মালিক আরিফ রায়হান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, শেষ মুর্হূতে জমজমাট বেচাকেনা হচ্ছে। শুরুর দিকে একটু কম বেচাকেনা হয়েছিল। বন্ধর দিনগুলো বই বেশি বিক্রি হয়েছে। কালধারা স্টল থেকে বই দেখে বের হওয়ার সময় কথা হয় সাইমন আহমেদ নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, বইয়ের দাম কমানো উচিত। বইয়ের প্রচুর দাম লেখা হয়েছে। কিন্তু দরকষাকষির পর দাম কমাচ্ছে বিক্রেতারা। আবার অনেক সময় বইয়ে লেখা যা দাম তাই নিচ্ছে। আমরা যারা বইপ্রেমী, তাদের ক্ষেত্রে বইয়ের দাম বেশি হলে খুব বেকায়দার পড়ে যাই। 

বইমেলায় গিয়ে দেখা গেছে, অন্যধারা, মূর্ধন্য, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, লাবণ্য, বাতিঘর, তৃতীয় চোখ, বিদ্যানন্দ, কথাপ্রকাশ, সাহিত্য বিচিত্রা, আবির প্রকাশন, শৈলী প্রকাশন, শিখা, সত্যয়ন, নন্দন, শালিক, গলুই, বলাকা, চন্দ্রবিন্দু, খড়িমাটি, শব্দশিল্প, প্রজ্ঞালোক, কাকলী, কালধারা, নন্দন, বলাকা, ইতিহাসের খসড়া, রাদিয়া স্টলে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। বইপ্রেমীরা স্টলে স্টলে ঘুরে পছন্দের বই কিনছেন। বইমেলায় আসা বেশিরভাগ দর্শনার্থীর হাতে বইয়ের প্যাকেট চোখে পড়েছে। 

কথা হয় কথাপ্রকাশ স্টলের বিক্রয়কর্মী রাসেল আহমেদ রাজুর সঙ্গে। এবারে বই বিকিকিনি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেষ মুহূতে এসে বইবিক্রি বেড়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হলে ক্রেতা আরো বাড়ত। প্রথম দিকে কম হলেও শেষদিকে এসে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। আর সরকারি বন্ধের দিন শুক্র ও শনিবার বেচাকেনা আরো বেশি হয়েছে। 

একই ভিড় দেখা গেছে শিশুপ্রকাশ, প্রতীক, আদিগন্ত, ভোরের কাগজ প্রকাশন, কথাবিচিত্রা, গল্পকার, নালন্দা, আফসার ব্রাদার্স, বাবুই, গাজী, কিডস পাবলিকেশন, হাওলাদার, ফুলঝুড়ি, নাগরী, ফুলকি, মাইজভাণ্ডারী প্রকাশন, জ্ঞানকোষ, কিংবদন্তি, প্রথমা, দ্বিমত, সালফি, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, আলোকধারার স্টলেও ক্রেতাদের ভিড় ছিল। 

মেলা কমিটির সদস্যসচিব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হাসেম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বইমেলার শুরু থেকে এ পর্যন্ত চার কোটি টাকার বেশি বই বিক্রি হয়েছে। বইমেলায় চার শতাধিক নতুন বই এসেছে। এবারের মেলা একটা নান্দনিক প্রাকৃতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলার নিরাপত্তা নিয়ে প্রকাশকদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে কিছুটা সংশয় থাকলেও আমরা পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ও বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের নিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাবেষ্ঠনী তৈরি করে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা ও রাজনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিথযশা লেখক-কবি-সাহিত্যিক, সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে  প্রতিদিন আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং আগরতলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত কবি-লেখক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বগণ অংশগ্রহণ করেন। বইমেলায় এবার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ১৬ জনকে অমর একুশে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। আগামীতে এই বইমেলাকে নিজস্ব ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে ‘চট্টগ্রাম বইমেলা’ হিসেবে আয়োজন করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রস্তাব করলে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীসহ উপস্থিত সকলে সাদরে গ্রহণ করেন। তাই আগামীতে এই মেলা ‘চট্টগ্রাম বইমেলা’ হিসেবে আয়োজন করা হবে। সেই মেলা আন্তর্জাতিকীকরণের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা