চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪ ২১:৪৮ পিএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪ ২২:১২ পিএম
চট্টগ্রামের সিআরবি শিরীষতলায় আয়োজিত ২৩ দিনব্যাপী বইমেলা শেষ হয়েছে শনিবার। আয়োজকরা বলছেন, সব মিলিয়ে বইমেলা এবার বেশ জমেছে। আগামী বছর এই মেলার পরিসর আরও বাড়ানো হবে। শনিবার (২ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে সিআরবির শিরীষতলায় গিয়ে দেখা গেছে বইপ্রেমীদের শেষ মুহূর্তের ভিড়। শেষ দিনে বইপ্রেমীদের হাতে ছিল বইয়ের একাধিক প্যাকেট।
শেষ দিনে বইমেলায় আসা আলমগীর কবির প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, শিরীষতলায় এবারের বইমেলা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে বইমেলার স্টল। বেশ দারুণ হয়েছে। বইমেলার এই কদিনে প্রিয় লেখক আনিসুল হক, ড. সদ্দীপক মল্লিক, বিশ্বজিৎ চৌধুরীসহ অনেক লেখেকের অন্তত তিন হাজার টাকার বই কিনেছি। তবে বইমেলার স্পেসটা আরেকটু বাড়ানো গেলে সৌন্দর্য আরও বাড়বে।
এ বছর মেলায় বিক্রি প্রসঙ্গে সাহিত্য বিচিত্রা স্টলের বিক্রয়কর্মী মো. ফাহাদ বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বই বিক্রি কম হয়েছে। তা ছাড়া অন্যান্য বছর মেলার শেষ দিন বেশ বেচাকেনা হতো। কিন্তু এবার ভিন্ন। শেষ হওয়ার এক দিন আগে সমাপনী অনুষ্ঠান করে ফেলায় শেষ দিন বইমেলায় লোকজন কম এসেছে। তা ছাড়া এবার বইমেলার প্রচারণাটা ভালো হয়নি বলেও জানান তিনি।
শেষ দিনে প্রথমা, বাতিঘর, খড়িমাটি, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, কথা প্রকাশ, শিশুপ্রকাশ, প্রতীক, আদিগন্ত, ভোরের কাগজ প্রকাশন, কথাবিচিত্রা, গল্পকার, নালন্দা, আফসার ব্রাদার্স, বাবুই, গাজী, কিডস পাবলিকেশন, হাওলাদার, ফুলঝুড়ি, নাগরী, ফুলকি, জ্ঞানকোষ, কিংবদন্তি, প্রথমা, দ্বিমত, সালফি, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, আলোকধারার স্টলে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ে।
বইমেলা আয়োজনের সহযোগী হিসেবে কাজ করা চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মো. সাহাব উদ্দীন হাসান বাবু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, চার বছরের ধারাবাহিকতা ভেঙে নতুন জায়গায় এবার বইমেলা হয়েছে। এ কারণে সফলতার ব্যাপারে প্রকাশকদের মাঝে প্রাথমিক শঙ্কা থাকলেও পহেলা ফাল্গুন ও একুশে ফেব্রুয়ারির পর লেখক-পাঠকসহ সর্বস্তরের দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়ে বই বিকিকিনি ভালো হয়েছে। মেলার শেষ দিন পর্যন্ত ১৬৫টি স্টলে মোট সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার মতো বই বিক্রি হয়েছে। কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলেও এবারের বইমেলা সার্বিকভাবে সফল হয়েছে। আগামীতে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিনই মেলা আয়োজনে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করবে বলে তিনি জানান।
মেলা কমিটির সদস্য সচিব চট্টগাম সিটি করপোরেশনের শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, এবারের বইমেলায় দর্শনার্থীর কমতি ছিল না। তবে বইপ্রেমী বা প্রকৃত পাঠকের সংখ্যা দর্শনার্থীর তুলনায় সীমিত ছিল। বিগত মেলাগুলোর তুলনায় দর্শকের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও ডিজিটাল অগ্রগতির কারণেই হয়তো প্রত্যাশিত মাত্রায় বই ক্রেতা ছিল না। এবারের বইমেলায় চার শতাধিক নতুন বই এসেছে। নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল। আগামীতে এই মেলায় আগরতলা, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের বাংলাভাষী প্রথিতযশা কবি-সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। ওই দেশের প্রকাশকদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে মেলায় আসার জন্য উৎসাহিত করা হবে। এতে মেলার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে আরও পরিত্যক্ত এলাকা ব্যবহার করে স্টল সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বইমেলার আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ভেন্যু মেলার ভেতরে না রেখে সন্নিহিত কোনো মাঠ বা খালি জায়গায় করতে চেষ্টা করা হবে। এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের একটা দাবি ছিল ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে আরও প্রচারণা বৃদ্ধি করার।