লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪৬ পিএম
ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু আলিফা চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রবা ফটো
ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের চরপাতা এলাকার মো. জামালের মেয়ে ফুটফুটে শিশু মোসা. আলিফা। বয়স মাত্র সাড়ে তিন বছর। এখনও বোঝার বয়স হয়নি তার। বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়ার স্বাদও বোঝেনা শিশু আলিফা। যে বয়সে পুরো পরিবার মাতিয়ে রাখার কথা, সে বয়সেই হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে আলিফা। প্রতিনিয়ত চালাতে হচ্ছে সংগ্রাম। এটি কিসের সংগ্রাম তাও ঠিকঠাক বোঝে না আলিফা। তবে পরিবারের লোকজন বোঝেন সবই। ছোট্ট আলিফার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধী ক্যান্সার।
আলিফার মামা মো. সোহেল মাহমুদ জানান, পাঁচ মাস আগে হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হয় আলিফা। এরপর তাকে লালমোহনের বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। তবে কিছুতেই সুস্থ হচ্ছিল না আলিফা। চিকিৎসক পরামর্শ দেন ঢাকায় নেওয়ার। পরামর্শ অনুযায়ী আলিফাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আলিফার ব্লাড ক্যান্সার শনাক্ত হয়। এরপর চিকিৎসার জন্য তাকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে আলিফা। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেখানে তার কেমোথ্যারাপীসহ অন্যান্য চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও জানান, আলিফার বাবা আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল না। তিনি চট্টগ্রামে বালুর জাহাজে মাসিক পনের হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন। তবে এরইমধ্যে গত পাঁচ মাসে আলিফার চিকিৎসায় বাড়ির বাগানের গাছ বিক্রির টাকা এবং আত্মীয়-স্বজনদের দেওয়া সহযোগিতায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়ে গেছে। এখন আর কোনোভাবেই টাকা জোগাড়ের সাধ্য নেই। তবে চিকিৎসক বলেছেন; আলিফার পুরো চিকিৎসায় অন্তত ১২ লাখ টাকার মতো খরচ হবে। এখন সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা না পেলে অকালেই ঝরে যাবে আলিফার জীবন। তাই আলিফাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার জন্য সকলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তার চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৩০০৭৬৪৯৫৯ এই নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান মো. সোহেল মাহমুদ।
আলিফার মা মোসা. নাজমা বেগম বলেন, ‘আলিফাকে নিয়ে আমার মোট তিন সন্তান। আলিফাই সবার ছোট। ওর বাবার আর্থিক অবস্থা তত ভালো না। আলিফার ক্যান্সার আক্রান্তের খবর শুনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। ডাক্তার জানিয়েছেন, আলিফার চিকিৎসায় দরকার হবে অন্তত ১২ লাখ টাকা। ক্যান্সার শনাক্তের পর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখনও সাত থেকে আট লাখ টাকার মত দরকার। কোথায় থেকে এতো টাকা জোগাড় করব, তাই ভেবে উঠতে পারছি না। আমরা গরীব-অসহায়, তাই হয়তো এতো টাকা জোগাড়ও করতে পারব না। তবে আমি আমার এই ফুটফুটে ছোট্ট মেয়েটাকেও হারাতে চাই না। তাই অনুরোধ করছি, মানবিক দিক থেকে হলেও যেন আমার মেয়ে আলিফার চিকিৎসায় সকলে এগিয়ে আসেন।’
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ বলেন, ‘দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারিভাবে অনুদানের ব্যবস্থা রয়েছে। ওই শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করব।’