× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাজশাহী

কিশোর গ্যাংয়ের হোতা রুয়েট কর্মচারী টিটুর যত অপকর্ম

রাজশাহী অফিস

প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৪ ১০:৩৯ এএম

আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৪ ১১:০৭ এএম

ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশকে মারতে গেলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু। প্রবা ফটো

ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশকে মারতে গেলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু। প্রবা ফটো

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) জুনিয়র সেকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকলেও অফিস না করেই বেতন তোলেন। এ ছাড়াও রাজশাহী মহানগরীর পাড়ামহল্লার কিশোর গ্যাংসহ উচ্ছৃঙ্খল ও বখাটে যুবকদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মারমুখী আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি রাসিক মেয়রের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) ও রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু। তার অপকর্মের যেন শেষ নেই।

রুয়েটের একটি সূত্রের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে জুনিয়র সেকশন অফিসার হিসেবে টিটু রুয়েটে যোগদানের পর রূপালী ব্যাংক রুয়েট করপোরেট শাখায় ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই একটি সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাব চালু করেন। ওই হিসাব নম্বরে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত বেতন-ভাতা জমা হয়েছে। টিটুর মাসিক বেতন ৩০ হাজার ৫৩ টাকা নিয়মিতভাবে ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে এবং তা তিনি উত্তোলন করেছেন। চাকরিতে অনুপস্থিত থেকেও গত পাঁচ বছরে ১৯ লাখ ৩ হাজার ১৮০ টাকা বেতন-ভাতা নিয়েছেন। অফিস না করায় টিটুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়া বেতন ফিরিয়ে দেওয়াসহ বর্তমানে তার বেতন স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার আরিফ আহমেদ চৌধুরী।

২০১৮ সালে রাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রুয়েটে অফিস করা বাদ দেন টিটু। ছুটি না নিয়েই তিনি মেয়রের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০২৩ সালে রুয়েটে নতুন ভিসি যোগদানের পর এ বিষয়ে তদন্ত হয়। তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বেতন-ভাতা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশসহ বেতন স্থগিত করা হয়। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে মেয়র লিটনের নাম ভাঙিয়ে এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নানান অপকর্মে জড়িয়ে পড়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

এ ছাড়াও টিটুর বিরুদ্ধে রাজশাহী মহানগরীর পাড়ামহল্লার কিশোর গ্যাংসহ উচ্ছৃঙ্খল ও বখাটে যুবকদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার আশ্রয়ে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী বাহিনী। রাজশাহীর আলোচিত সন্ত্রাসী গ্রুপ ‘তরিক বাহিনী’র নেপথ্যে মদদদাতা হিসেবেও পরিচিত টিটু। এই বাহিনী বোমাবাজি, মাদক কারবার, বালুমহাল দখল, ফুটপাথে ও নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদাবাজি এবং অস্ত্র কেনাবেচাসহ সব ধরনের অপরাধেই জড়িত। মোটরসাইকেল চুরি ও ছিনতাইয়ের মূলহোতাও তারা। সম্প্রতি এ বাহিনীর সদস্যরা রাসিকের এক কাউন্সিলরকে তার কার্যালয়ে ঢুকে তাকে গুলি করার পর টিটুর নাম সামনে আসে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মারমুখী আচরণেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্রমতে, রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গত ২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে আসেন। নগরীর উপশহর পুলিশ ফাঁড়িটি ক্যান্টনমেন্ট লাগোয়া। প্রধানমন্ত্রী আসার আগের দিন উপশহর দিয়ে তিনজন যুবক হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় ফাঁড়িতে ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা তাদের মোটরসাইকেল থামিয়ে তল্লাশি করেন। এ সময় কনস্টেবল সাদিকুল ইসলামের সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই তিনজন নিজেদের স্বেচ্ছাসেক লীগ নেতা টিটুর লোক বলে পরিচয় দিলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর টিটু তিন যুবককে নিয়ে ফাঁড়িতে হাজির হয়ে অন্যান্য পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে কনস্টেবল সাদিকুল ইসলামের ওপর চড়াও হন। তাকে গালিগালাজ করে মারতে উদ্যত হন।

উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল সাদিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের ফাঁড়িটি ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পাশেই। ভিআইপি প্রোটোকল থাকায় আমরা মোটরসাইকেলের তিন আরোহীকে তল্লাশির জন্য থামাই। এ সময় তারা টিটু ভাইয়ের লোক বলে পরিচয় দেয়। টিটু ভাইকে আমরা চিনি। তল্লাশি শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় এবং হেলমেট পরতে বলি। পরে ওই যুবকদের সঙ্গে নিয়ে টিটু ভাই ফাঁড়িতে আসেন। এরপর যা ঘটেছে সবই অন্যান্য সহকর্মী এবং ফাঁড়ির ইনচার্জের সামনেই হয়েছে।

উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. আরিফ বলেন, ফাঁড়িতে ঢুকে টিটুর এমন আচরণের পর তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

আরএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা