চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪ ২১:০৯ পিএম
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪ ২১:৫২ পিএম
চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারের অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ কোটি টাকা সরাল পুলিশ। ছবি : সংগৃহীত
ফ্রিল্যান্সার আবু বকর
সিদ্দিককে আটকের পর তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার (প্রায় ৩
কোটি ৩৮ লাখ টাকা) সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ডিবি পুলিশের কয়েকজন সদস্যের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক
প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। রবিবার (১০ মার্চ ) নগর পুলিশের অভ্যন্তরীণ এই তদন্ত কমিটির প্রধান
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আসিফ মহিউদ্দিন তদন্ত প্রতিবেদন
হস্তান্তর করেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনারের কাছে তিনি এই প্রতিবেদন
দেন।
এডিসি আসিফ মহিউদ্দিন
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে
কী আছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিবি পুলিশ পরিদর্শক
রুহুল আমিন, উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন, এএসআই বাবুল মিয়া, শাহ পরান
জান্নাত, মো. মাইনুল হোসেন ও কনস্টেবল মো. জাহেদ ও আব্দুর রহমান ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
তাদের সবাইকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত রাখা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, রুহুল আমিন এ ঘটনার
নেপথ্যে কাজ করেছেন। অন্যদিকে দুই সোর্সের মাধ্যমে বিটকয়েন সরিয়ে নিয়েছেন এএসআই বাবুল
মিয়া।
২৬ ফেব্রুয়ারি রাত
সাড়ে ১০টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার গুলবাগ আবাসিক এলাকার বারাকা এন্টারপ্রাইজ
নামের কুলিং কর্নারে চা পান করার সময় আবু বকর সিদ্দিককে আটক করে পরিদর্শক মো. রুহুল
আমিনের নেতৃত্বে একটি দল। অনলাইনে জুয়া খেলার অভিযোগে পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মামলা
করে আবু বকর সিদ্দিককে আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। জরিমানা দিয়ে আদালত থেকে তিনি মুক্তি
পেয়েছেন।
আবু বকর সিদ্দিকের অভিযোগ,
তার হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে মোবাইলের লক খুলেছিলেন পুলিশ সদস্যরা। ওই রাতে তাকে মনসুরাবাদে
ডিবি হেফাজতে রাখা হয়। এ সময় তার মোবাইল থেকে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ৫ লাখ করে ১০
লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট
থেকে ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার (প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় আবু বকরকে মিথ্যা
মামলায় ফাঁসানো ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে ৫ মার্চ আট পুলিশ
সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আবু বকরের স্ত্রী
হুসনুম মামুরাত লুবাবা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)
তদন্তের নির্দেশ দেন। অন্যদিকে ২ মার্চ আবু বকরকে পলাতক দেখিয়ে ও গোয়েন্দা পুলিশের
দুই সোর্স মো. কাউসার আহম্মদ ও শাহাদাত হোসেনকে আসামি করে বায়েজিদ বোস্তামী থানায়
বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের অভিযোগে মামলা করেন ডিবির এসআই মো. আলমগীর
হোসেন। এদের মধ্যে সোর্স মো. কাউসারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।