× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:১৪ পিএম

আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:২০ পিএম

জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে মার্চ-এপ্রিল মাছ শিকার থেকে জেলেদেরকে বিরত রাখতে সরকার কর্তৃক ৮০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ২ হাজার ৬২৭ জনের নাম রয়েছে। কিন্তু তারা সবাই প্রকৃত জেলে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে চররমনী মোহন ইউনিয়নের ডা. আবদুল হক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ চাল বিতরণ করা হয়। 

চররমনী মোহন ইউনিয়নের বাসিন্দা মুরশিদা বেগম, মাহবুব আলম, কাঞ্চন, আবুল কাশেম, মো. মুসলিম ও মো. বেলালের দাবি, নদীতে মাছ ধরেই তাদের সংসার চলে। নিষেধাজ্ঞাকালীন তারা নদীতে মাছ ধরতে যান না। এ সময় সরকারি সহায়তাও পান না। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা তাদের আত্মীয়-স্বজনদেরকে জেলে কার্ড পাইয়ে দিয়ে চাল দেন। অন্য পেশার মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জেলে কার্ড দেন।

মুরশিদা বেগম তার স্বামী ছামু খার জেলে কার্ড নিয়ে চাল নিতে আসেন। কিন্তু তিনি চাল পাননি। শুধু সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের দেওয়া তালিকাভুক্ত কার্ডধারীদের চাল দেওয়া হয়েছে। মুরশিদা বেগম বলেন, কাল (আজ) থেকে রোজা শুরু। ঘরে একমুঠো চাল নেই। নদীতেও যাওয়া যাবে না। স্বামী অসুস্থ থাকায় তার কার্ড নিয়ে চাল নিতে এসেছি। মনে করেছি চাল পাব। কিন্তু চালের তালিকায় আমার নাম নেই। অন্যান্য পেশার লোকজন দেখি চাল নিয়ে যাচ্ছে।

কৃষক বজলুর রহমান ও সবজি বিক্রেতা মো. হোসেন চাল পেয়েছেন। এর মধ্যে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বজলুর রহমানের পরিচিত কয়েকজন জানান, বজলুর চররমনী মোহন এলাকায় কয়েক একর জমি রয়েছে। তিনি সেখানে ফসল আবাদ করেন। একসময় জেলে থাকলেও এখন তিনি কৃষক। পুরোনো কার্ড দিয়ে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে তিনি সরকারি বরাদ্দের চাল পান।

অন্যদিকে জেলে কার্ডে চাল নেওয়া মো. হোসেন মজুচৌধুরীর হাটের একজন সবজি বিক্রেতা। তার বাড়ি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। জানা গেছে, একসময় তিনি জেলে ছিলেন। পরে জেলে পেশা ছেড়ে দিয়ে সবজি বিক্রি করছেন। তবে প্রতি বছর জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল পাচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে বজলুর রহমান ও মো. হোসেনের বক্তব্য জানতে চাইলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫ জন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, চাল পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই এখন অন্য পেশায়। আগে জেলে পেশায় থাকলেও এখন অন্য পেশায় জড়িত। আবার অনেকেই আছেন, যাদের মধ্যে কেউই কখনও জেলে পেশায় ছিলেন না। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা (মেম্বার) যাচাই-বাছাই করে চালের কার্ড দেন। এক্ষেত্রে ভোটের রাজনীতি চলে। পাশাপাশি যারা জনপ্রতিনিধিদের আস্থাভাজন, তাদেরও কার্ড দেওয়া হয়। তাদের আত্মীয়-স্বজনরাও কার্ড পান।

ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মুসলিম বলেন, আমার চার ছেলে জেলে পেশায় জড়িত। তাদের নামে চারটি কার্ড রয়েছে। কিন্তু তারা কেউ চাল পায় না। চেয়ারম্যান বা মেম্বারকে বললে তারা মৎস্য অফিসে পাঠায়। মৎস্য অফিস আবার তাদের কাছে পাঠায়।

চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল বলেন, ‘ইউনিয়নে ৪ হাজার ২০০ জন তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৬২৭ জনের জন্য চাল বরাদ্দ এসেছে। বাকি জেলেরা চাল পাচ্ছেন না। বিতরণে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।’

সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার জামান বলেন, ‘জেলে কার্ড দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারা যাচাই-বাছাই করে কার্ড দেন। এটার দায়দায়িত্বও তাদের।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ‘জেলে কার্ডগুলো প্রতিনিয়ত সংশোধন করা হচ্ছে। অনেক জেলে আছে, তাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে।’

জাটকা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। জেলেদের অভয়াশ্রমে মাছ শিকার থেকে বিরত রাখতে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীপুরের ২৮ হাজার ৩৪৪ জন জেলের জন্য ২ হাজার ২৬৭ দশমিক ৫২ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। প্রত্যেক জেলে পরিবার দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি চাল পাবে। তবে লক্ষ্মীপুরে তালিকাভুক্ত জেলের সংখ্যা ৫২ হাজার ৯৫৫।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা