রাঙামাটি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩৬ পিএম
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫৪ পিএম
শিকার করা কুকুর বেঁধে রাখা হয়েছে নৌকায়। বুধবার রাঙামাটির রিজার্ভবাজার চেঙ্গীমুখ এলাকায়। প্রবা ফটো
কয়েক দিন ধরে রাঙামাটি জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর এসেছে। জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় একদল তরুণ-তরুণী প্রশাসনের সহযোগিতায় কিছু কুকুর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। স্থানীয়দের দাবি– কুকুর শিকারে জড়িতরা ভারতের মিজোরামের কুকি সম্প্রদায়ের লোকজন। তারা রাস্তা থেকে বেওয়ারিশ (মালিক নেই এমন) ও পালিত কুকুর শিকার করছিল।
সবশেষ বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে শহরের কয়েকটি এলাকা থেকে বেওয়ারিশ কুকুর ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পান প্রাণী রক্ষায় কাজ করা স্থানীয় কয়েকজন তরুণ-তরুণী। পরে তারা শিকারিদের পিছু নিয়ে শহরের রিজার্ভবাজার চেঙ্গীমুখ (নাপ্পিঘাটা) এলাকায় পৌঁছান। সেখানে তরুণ-তরুণীরা দেখতে পান– একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় বিশেষ কায়দায় বেশ কিছু কুকুর বেঁধে রাখা হয়েছে।
ওই তরুণ-তরুণীদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘আমার এক ছোট বোন জানিয়েছে সোমবার টিটিসির মুখ থেকে পাঁচটি কুকুর ধরা হয়েছিল। দুই-তিন দিন ধরেই রাঙামাটি শহর থেকে কুকুর ধরা হচ্ছে। আজ (বুধবার) সকাল থেকে আমরা শিকারিদের অনুসরণ করে রিজার্ভবাজার চেঙ্গীমুখ (নাপ্পিঘাট) এলাকায় যাই। সেখানে তখন চারজন কুকুর শিকারি ছিল।‘
তিনি আরও বলেন, ‘চেঙ্গীমুখে একটি নৌকায় ২০টি কুকুর রাখা ছিল। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় কুকুরগুলো উদ্ধার করে শহরের রাজবাড়ী, কলেজগেট, কল্যাণপুর ও ভেদভেদি এলাকায় ছেড়ে দিই। আমাদের ধারণা– মিজোরাম থেকে আসা কুকি সম্প্রদায়ের লোকজন কুকুর শিকার করছে।’
প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯ অনুযায়ী– কোনো কারণ ছাড়া মালিকবিহীন কোনো প্রাণিনিধন বা অপসারণ করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি মালিকবিহীন প্রাণী হত্যা করলে তা আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলার বরকল উপজেলা হয়ে ভারতের মিজোরাম থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে রাঙামাটি শহরে কুকুর ধরতে আসে এসব শিকারিরা। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে রাঙামাটি শহর থেকে বেশ কিছু কুকুর ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া একই বছরের নভেম্বরে খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলার বোয়ালখালী বাজার, বাবুছড়া ও থানা বাজার থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যায় মিজোরাম থেকে আসা শিকারিরা।
রাঙামাটিতে কুকুর উদ্ধারকারীদের তথ্যমতে– দুই-তিন দিন ধরে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু কুকুর ধরা হয়েছে। বুধবার তারা চেঙ্গীমুখ (নাপ্পিঘাটা) এলাকায় গিয়ে কুকুর নিয়ে যেতে শিকারিদের বাধা দেন। খবর পেয়ে সেখানে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নেলী রুদ্র উপস্থিত হন। তার উপস্থিতিতে কুকুরগুলো উদ্ধার করেন তরুণ-তরুণীরা।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নেলী রুদ্র বলেন, ‘শহর থেকে কুকুর ধরে রিজার্ভবাজার এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আমরা সেখানে গিয়ে কুকুরগুলো ছেড়ে দিয়েছি।’ তবে কুকুর শিকারে কারা জড়িত– এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত নন বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি।