× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৮ সাংবাদিককে জেলে পাঠানোর ‘হুমকি’

লালমনিরহাটে এসিল্যান্ডের বিচার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

লালমনিরহাট প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪ ২১:০৫ পিএম

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪ ২১:৫৬ পিএম

এসিল্যান্ডের বিচারের দাবিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক মিশনমোড় চত্বর অবরোধ করা হলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। প্রবা ফটো

এসিল্যান্ডের বিচারের দাবিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক মিশনমোড় চত্বর অবরোধ করা হলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। প্রবা ফটো

লালমনিরহাট সদর উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে আট সাংবাদিককে আটকে রেখে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ ও জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সাংবাদিকরা। তারা বলছেন, অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া না হলে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার ভাষ্য, অনিয়মের ফাইল আটকে দিয়ে চক্রান্তের শিকার তিনি। 

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল্ল্যাহ আল নোমানের কার্যালয়ে ওই ঘটনা ঘটে।

অবরুদ্ধ সাংবাদিকরা হলেন- মাইটিভি ও অবজারভারের জেলা প্রতিনিধি মো. মাহফুজ সাজু, ইনডিপেনডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলাম বিপু, এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মো. নিয়ন দুলাল, বিজনেস বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি মো. আশরাফুল আলম, কালবেলার জেলা প্রতিনিধি এসকে সাহেদ, অনলাইন সময়ের কণ্ঠস্বরের জেলা প্রতিনিধি মো. কাওসার আলম, দৈনিক নবচেতনা ও প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব মো. লিয়াকত হোসেন, দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ সূর্য।  

মাইটিভির লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি মো. মাহফুজ সাজু বলেন, ‘জমি খারিজ করতে আসা কয়েকজনের অনুরোধে আমি দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার মো. আব্দুল্ল্যাহ আল নোমানের কার্যালয়ে যাই। তিনি তখন চেয়ারে ছিলেন না, কিন্তু জমি খারিজ করতে আসা ব্যক্তিদের শুনানি করছিলেন তিনজন কর্মচারী। এ সময় আমি তাদের ভিডিও ধারণ করলে কর্মচারীরা প্রথমে আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। পরে সহকারী কমিশনার নোমানকে ডেকে আনেন। এরই মধ্যে খবর পেয়ে আরও সাতজন সাংবাদিক উপস্থিত হন। এসিল্যান্ড এসেই কোনো কিছু না শুনে আমাদের আট সাংবাদিককে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। বিষয়টি বাইরে থাকা সাংবাদিকরা জানতে পেয়ে জেলা প্রশাসককে অবগত করেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) টিএমএ মোমিনকে পাঠিয়ে আমাদের উদ্ধার করেন। তিনি না এলে আমাদের জেলে পাঠাতেন এসিল্যান্ড। ঘটনাস্থলে একজন সিনিয়র কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় ও দালাল বলে গালাগাল করেন এসিল্যান্ড। চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরাম্যান আব্দুল মান্নানের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র সঙ্গে না থাকায় তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন তিনি। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা ওই কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের মিশনমোড় চত্বর অবরোধ করেন। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন এবং এসিল্যাল্ডের বিচারের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।’

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, ‘আমার কর্মচারীরা জমি খারিজসংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে আমার কাছে প্রতিবেদন আকারে জমা দেন। এসব বিষয় ও অফিসে আমার দেরিতে আসা নিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে আসা মাহফুজ সাজু সাহেব রীতিমতো চার্জ করে বসেন। একপর্যায়ে তিনি তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এসবই ছিল ঘটনার সূত্রপাতের মূল বিষয়। আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন আব্দুল মান্নান নামের একজন সাংবাদিক। হেলমেট না থাকায় এবং গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।  আমি কোনো অন্যায় করিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিভিন্ন অনিয়মের ফাইল আটকে দিয়েছি। এসব কারণে কেউ আমার পেছনে সাংবাদিকদের ব্যবহার করতে পারেন। আপনি ঘটনার বিস্তারিত দেখতে ও শুনতে চাইলে আমাদের সদর উপজেলা এসিল্যান্ডের অফিসের ফেজবুক পেজে গেলে সবকিছু পাবেন।’  

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) টিএমএ মোমিন বলেন, ‘আমি এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে গিয়ে উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি। আর জমি খারিজের বিষয়ে কর্মচারীরা শুনানি করতে পারেন না। বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যার নিজেই খতিয়ে দেখছেন।’

লালমনিরহাট প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন স্বপন বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এসিল্যান্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। যদি আগামী রবিবারের মধ্যে ওই ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে সাংবাদিকরা আন্দোলনে যাবে, বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’  

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। এজন্য আমি নিজেই তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা