× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জীবনের গল্প

নায়িকা বনশ্রী কেমন আছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে

মাদারীপুর সংবাদদাতা

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪ ১৩:৫১ পিএম

আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৪ ১৪:০৫ পিএম

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মেয়ে চিত্রনায়িকা বনশ্রী ও ছেলে মেহেদী হাসান রোমিও। প্রবা ফটো

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মেয়ে চিত্রনায়িকা বনশ্রী ও ছেলে মেহেদী হাসান রোমিও। প্রবা ফটো

একসময় রুপালি পর্দা কাঁপিয়েছেন চিত্রনায়িকা বনশ্রী। নব্বইয়ের দশকের ‘সোহরাব-রুস্তম’, ‘মহা ভূমিকম্প’সহ আলোচিত কয়েকটি ঢাকাই সিনেমার নায়িকা তিনি। শহুরে জীবনের নানা চড়াই-উতরাই শেষে তিনি ফিরে এসেছেন নিজ এলাকা মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায়। নানান জায়গায় ঘুরে অবশেষে ঠাঁই মিলেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে। ছেলে মেহেদী হাসান রোমিওকে নিয়ে থাকছেন সেখানেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুদান হিসেবে পাওয়া ২০ লাখ টাকার সুদ দিয়ে চলছে তার সংসার।

শিবচরের মাদবরের চর ইউনিয়নের মেয়ে বনশ্রী। ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামে জন্ম তার। বাবা মজিবুর রহমান মজনু শিকদার ও মা সবুরজান রিনার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বনশ্রী বড়। সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে রাজধানী ঢাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি। ১৯৯৪ সালে সোহরাব-রুস্তম সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে বনশ্রীর। নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে ছবিটি ব্যবসা সফল হয়। পরিচিতি পান বনশ্রী। এরপর আরও গোটা দশেক সিনেমায় অভিনয় করেন। নায়ক মান্না, আমিন খান, রুবেলের বিপরীতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন বনশ্রী। রুপালি পর্দার মতো জীবনও হয়ে ওঠে আলো ঝলমল।

বনশ্রী বলেন, একসময় বিটিভিতে আবৃত্তি করতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতিমনা ছিলেন। উদীচী গণসাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিনয় শেখেন সুবচন নাট্য সংসদে। সেখান থেকেই চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ আসে। বনশ্রী বলেন, নব্বইয়ের দশকে বাংলা সিনেমার জয়জয়কার ছিল। বিনোদনের মধ্যে বিটিভি আর ছিল সিনেমা হল। সে সময় ১০টির মতো সিনেমায় কাজ করেছি। ‘নেশা’, ‘মহা ভূমিকম্প’, ‘প্রেম বিসর্জন’, ‘ভাগ্যের পরিহাস’ ছবিতে কাজ করি। নায়ক মান্না, রুবেলের সঙ্গে অভিনয় করেছি। চলচ্চিত্র ছেড়ে দেওয়ার পরই আর্থিক অনটনে পড়ি। শাহবাগে একসময় ফুলের ব্যবসাও করেছি। বাসে বাসে হকারি করতে হয়েছে তিন বেলা খাবার জোটাতে।

তিনি বলেন, এক ছেলে আর এক মেয়ে আমার। মেয়েটি যখন সেভেনে পড়ে তখন অডিও কোম্পানি সঙ্গীতার মালিক সেলিম খান আমার মেয়েকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যায়। ওকে মডেল বানায় সে সময়। মেয়েকে আর ফেরত দেয়নি। থানা-পুলিশ করেও ফেরত পাইনি।

স্বামীসহ পারিবারিক বিষয়ে বলতে চান না বনশ্রী। তিনি বরং বর্তমানের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন। বনশ্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুদানের ২০ লাখ টাকা পেয়েছেন দুস্থ শিল্পী হিসেবে। ওই টাকা ব্যাংকে রেখে প্রাপ্ত ইন্টারেস্ট দিয়ে এত দিন ঢাকায় কোনোমতে চলেছেন। ওই টাকায় ঢাকায় সংসার চালাতে ব্যর্থ হয়ে গ্রামে চলে আসেন। বনশ্রী বলেন, গ্রামে এসে একটি টিনের ঘর ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করি। টেলিভিশনে দেখি প্রধানমন্ত্রী মানুষকে গুচ্ছগ্রামে ঘর দিচ্ছেন। পরে আমিও একটি ঘর পেয়েছি। এখন এখানেই থাকছি। ছেলেটাকে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে এখন।

বনশ্রী ব্যবসা করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে চান। তিনি বলেন, সেলাইয়ের কাজ জানি। এই প্রতিভা বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগাতে চাই। মেয়েদের পোশাক তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা করতে চাই। কিন্তু যেখানে মৌলিক চাহিদা পূরণই দায় সেখানে এই ব্যবসা স্বপ্ন হয়েই আছে। বনশ্রী বলেন, সহজ শর্তে ঋণ পেলে আমি ব্যবসাটি দাঁড় করাতে পারতাম। এখানে আরও মেয়েরা সেলাইয়ের কাজ করতে পারত।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিবুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় শিবচর উপজেলার প্রত্যেকটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। সেখানে নায়িকা বনশ্রী একটি ঘর পেয়েছেন। তিনি সেখানে বসবাস করছেন। কোনো সমস্যা হলে প্রশাসন দেখবে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা