কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪ ২১:১৯ পিএম
কুমিল্লায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ছাত্রদল নেতা জামিল হাসান অর্ণব।
কুমিল্লা নগরী সংলগ্ন শাসনগাছায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে জামিল হাসান অর্ণব নামে এক ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় ২৫ জন অস্ত্রধারীকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। সীমান্ত দিয়ে যেন পালিয়ে যেতে না পরে এজন্য তাদেরকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এ ঘটনায় শনিবার (১৬ মার্চ) এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) থানায় কোনো মামলা হয়নি। দুপুরে শাসনগাছা ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় জানাজা শেষে অর্ণবকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অর্ণব ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শাসনগাছা বাস টার্মিলের লেগুনের স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে স্থানীয় দফাদার বাড়ি ও মোল্লা বাড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এ নিয়ে টার্মিনালের পাশে দুই পক্ষ শুক্রবার সংঘর্ষে জড়ায়। এতে মধ্যমপাড়া দপাদার বাড়ির মো. আজহার মিয়ার বড় ছেলে জামিল হাসান অর্ণব গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন আরও চারজন।
সংঘর্ষের তিন মিনিট ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, এক পক্ষের লোকজনকে অন্য পক্ষের ওপর গুলি, ককটেল ও ইট মারছে। তাদের তিন-চারজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০-১২জনের হাতে রামদা ছিল। কয়েকজন মুখে মাস্ক পরা ছিলেন। অন্য পক্ষকে ভিডিওতে দেখা যায়নি, তবে গুলির শব্দ শোনা গেছে। এছাড়া ককটেল ও ইট ছুড়ে মারতে দেখা যায়।
জামিলের বাবা মো. আজহার মিয়ার জানান, তার ছেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে পড়তেন। শাসনগাছা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সড়কে লার্নিং হোম নামের একটি কোচিং সেন্টার চালাতেন। এছাড়া শাসনগাছা বাস টার্মিনালে সততা পরিবহনের বাস কাউন্টারে কাজ করতেন। বাস টার্মিনালের স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চলছিল। তবে তার ছেলে এতে জড়িত ছিলেন না। তার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ ছিল না। অর্ণব জুমার নামাজ পড়ে ঘরে ফিরছিলেন। দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে তিনি গুলিতে নিহত হন। তার বুকে গুলি লাগে।
জামিল হাসানের মা ঝর্ণা আক্তার জানান, তার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে অর্ণব সবার বড়। ছেলেটা সংসারের জন্য পরিশ্রম করতেন। তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘শাসনগাছা এলাকার মোল্লাবাড়ি ও মধ্যমপাড়া এলাকার লোকজন বাস টার্মিনালের লেগুনা স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে একজন মারা যান। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সংঘর্ষে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।’