× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অগ্নিদুর্ঘটনা

প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই বহুতল ভবনগুলোতে

তরিকুল ইসলাম মিঠু, যশোর

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১০:৫৭ এএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১১:৪৩ এএম

অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধব্যবস্থা নেই যশোরের বেশিরভাগ বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনে। প্রবা ফটো

অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধব্যবস্থা নেই যশোরের বেশিরভাগ বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনে। প্রবা ফটো

অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধব্যবস্থা নেই যশোরের বেশিরভাগ বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনে। এমনকি রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক হোটেলগুলোতেও নেই অগ্নিনির্বাপণের সুব্যবস্থা। তারপরেও অহরহ গড়ে উঠছে নতুন নতুন বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন। এসব ভবনেও রাখা হয়নি অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা।

অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন ভবনে চলছে রেস্টুরেন্ট ও হোটেলের ব্যবসা। অগ্নিনির্বাপণের সুব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই ঘটছে অগ্নিদুর্ঘটনা। যশোর ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে যশোরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল ২৬১টি। যার আর্থিক ক্ষতি ছিল ২ কোটি ৬৯ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৭ টাকা। ২০২১ সালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল ২৪৬টি। আর্থিক ক্ষতি ছিল ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩১ হাজার ৮০০ টাকা। এবং গেল ২০২২ সালে যশোর জেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল ৩২২টি। যাতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল ২ কোটি ১১ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ২৮৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল ২ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

দীর্ঘদিন ধরে ভবনগুলোতে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধব্যবস্থা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ না হলেও সম্প্রতি ঢাকার বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনেরে মৃত্যুর পর কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার হোটেল-রেস্তোরাঁসহ ৭৫৮টি আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিককে নোটিস দেওয়া হয়েছে। নোটিসে তাদের প্রতিষ্ঠানে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি স্থাপন নিশ্চিত করে হালনাগাদ তথ্য ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অবহিত করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। গত ৩ মার্চ যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার স্বাক্ষরিত এক নোটিসে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ও ঘনবসতি এলাকায় বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। আবার কিছু বহুতল ভবনেও আগুন লেগেছে। তবে এসব বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণের সক্ষমতা এখনও গড়ে ওঠেনি ফায়ার সার্ভিসের। কেননা বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণের জন্য যে টার্ন টেবল ল্যাডার (টিটিএল) গাড়ি প্রয়োজন, সেটি তাদের নেই। একই সঙ্গে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ ও পানিস্বল্পতা অগ্নিনির্বাপণে বড় অন্তরায়। তাদের মতে, গত তিন বছরে জেলায় শতাধিক পুকুর বা জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। এতে পানিস্বল্পতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে পানির উৎস খুঁজতে খুঁজতে অনেক সময় আগুনে পুড়ে বড় ধরনের আর্থিক ও জীবনহানির মতো ঘটনা ঘটে।

সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ছোলজার রহমান বলেন, শহরে বর্তমানে ৮ থেকে ১৭ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মিত হয়েছে। অধিকাংশ ভবনে অগ্নিনির্বাপণের সুব্যবস্থা নেই। প্রাকৃতিক পানির উৎস নদী, দিঘি, পুকুর ও জলাশয়গুলো আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। পৌরসভা যেসব বাড়ি অনুমোদন দিচ্ছে সেখানে চওড়া রাস্তার ব্যবস্থা নেই। ফলে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিসের কিছু করা থাকে না। তারা গাড়ি নিয়ে যেতে পারে না। এতেই প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতির হার বাড়ছে।

যশোর পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ সাজিয়া সুলতান বলেন, গত তিন বছরে আড়াই শতাধিক ভবন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ ৬ তলা পর্যন্ত ভবন অনুমোদন দিয়ে থাকে। সেখানে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা থাকা বাধ্যতামূলক। তবে কী পরিমাণ পুকুর বা জলাশয় ভরাট হচ্ছে তা নির্ণয় করা কঠিন। কেননা রাতারাতি সবাই পুকুর ভরাট করে ফেলছে। সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। 

ফায়ার সার্ভিস যশোর স্টেশনের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ বলেন, অগ্নিঝুঁকি নিরসন ও অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে জেলার ৮ উপজেলার ৭৫৮টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিককে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি স্থাপনের নিশ্চিত করে হালনাগাদ তথ্য দিতে নোটিস দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ৬৬টি বাজার মালিক সমিতি, ৮৭টি মার্কেট, সুপার মার্কেট ও শপিং মল, ৫০৫টি হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ৪৫টি বহুতল ভবন এবং ৫৫টি হোটেল অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা শুধু এ সংকট মোকাবিলা করতে পারবে না। সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় প্রশাসন, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা