ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল
রহিম শুভ, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৮ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪ ১২:৪০ পিএম
শয্যা না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে শিশু রোগীদের। বুধবার ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। প্রবা ফটো
ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। ৪৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি আছে ১৬৩ রোগী। চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। একই বিছানায় দুজন করে রোগী রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য শিশু রোগীর ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতেই। গতকাল বুধবার দুপুরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেই শীত মৌসুম শেষ হলো, এখন গরম শুরু হয়েছে। তাই আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই হাসপাতালে শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে শিশু ওয়ার্ডে প্রায় এক হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি আছে ১৬৩ জন; এর আগের দিন ছিল ১৭০ জনের মতো। ১৬৩ শিশু রোগীর মধ্যে ডায়রিয়াজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ জন, জ্বর ও সর্দি নিয়ে ভর্তি ৭০ জন, নবজাতক রয়েছে ১৫ জন ও শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ৩২ জন। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোগী থাকায় এক শয্যায় দুজনকে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের মেঝে, বারান্দায় রেখেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। পঞ্চগড় থেকে তিন মাস বয়সি শিশু নিয়ে ভর্তি রয়েছেন রোমানা আক্তার। তিনি বলেন, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি। তাই একটি শয্যায় দুজন শিশু রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।’
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী থেকে আসা শাহিনা আক্তার বলেন, ‘হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত শয্যা নেই। তাই শিশু বাচ্চাকে নিয়ে মেঝেতেই থাকতে হচ্ছে। শিশুর চিকিৎসা এখানেই চলছে।’ সদরের কচুবাড়ি গ্রামের লাকি আক্তার বলেন, ‘এখন দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। এর কারণে আমার দুই বছর বয়সি বাচ্চা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় মেঝেতেই ঠাঁই হয়েছে।’
হাসপাতালের কনসালটেন্ট (শিশু) সাজ্জাত হায়দার শাহীন বলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুরা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, সর্দি, জ্বর ও পেটের ব্যথায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ সময় অভিভাবকদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের প্রচুর তরল ও ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। ঘেমে গেলে জামাকাপড় পরিবর্তন করে মুছে দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, শিশু ওয়ার্ডে শয্যার তুলনায় চার গুণ বেশি ভর্তি রয়েছে। আমাদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি। হাসপাতালে জনবল সংকট রয়েছে। জনবল বাড়ানো হলে নির্বিঘ্নে সেবা দিতে পারব।’
জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সেবা মানসম্মত হওয়ায় আশপাশের জেলার অনেক এলাকার অভিভাবক শিশুদের এখানে চিকিৎসা করান। এ কারণে হাসপাতালে সব সময় শিশু রোগীর চাপ থাকে। চিকিৎসকরাও সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’