দুর্গম পাহাড়ে মেডিকেল টিম
রাঙামাটি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪ ২১:৫৪ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪ ২২:৪৪ পিএম
বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে পৌঁছে চান্দবী ঘাট গ্রামে ঘুরে ঘুরে রোগীদের সেবা দেন রাঙামাটি থেকে যাওয়া স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম। প্রবা ফটো
রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম চান্দবী ঘাট গ্রামে ‘অজ্ঞাত রোগে’ আক্রান্ত ১৪ জন রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছে রাঙামাটি থেকে যাওয়া স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় সদস্যের মেডিকেল টিম।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে মেডিকেল টিম চান্দবী ঘাট গ্রামে পৌঁছায়। এরপর তিন ভাগে ভাগ হয়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ওই রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করেন চিকিৎসকরা।
গত তিন মাসে বরকল উপজেলায় তীব্র জ্বর, রক্তবমি ও পেট ব্যথায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ১০ জানুয়ারি চান্দিনাঘাট গ্রামের লবিন্দর চাকমা ও স্নেহবালা চাকমার ছেলে পত্ত রঞ্জন চাকমা প্রথম এই রোগে মারা যান। এ ছাড়া ১৪ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
এ ঘটনার পর এলাকায় ‘অজ্ঞাত রোগে’ মৃত্যুর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আজ রাঙামাটি থেকে মেডিকেল টিম যাওয়ার পর সে আতঙ্ক কিছুটা কমেছে দুর্গম পাহাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে।
চান্দবী ঘাটপাড়ার গ্রামপ্রধান (কার্বারি) শিব রতন চাকমা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘মেডিকেল টিম গ্রামে পৌঁছানোর পর গ্রামের মানুষদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গ্রামবাসীরা মেডিকেল টিমকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।’
ভূষণছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রীতিশংকর দেওয়ান বলেন, ‘মেডিকেল টিম আসার পর তারা ভাগ হয়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করেছে। এতে গ্রামের মানুষের মাঝে এখন আতঙ্ক অনেকটা কমে গেছে। অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত রোগীরা এত দিন গ্রামের কবিরাজি (বৈদ্য) চিকিৎসা নিলেও আজকে থেকে তারা মেডিকেল টিমের চিকিৎসা নিচ্ছে।’
বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মংক্যছিং (সাগর) বলেন, ‘পায়ে হেঁটে দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে গ্রামে পৌঁছে চিকিৎসকরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে রোগীদের ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করেছেন। রোগীদের অবস্থা দেখে তারা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।’
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আজকে সকালে আমাদের মেডিকেল টিম সেখানে পৌঁছানোর সঙ্গে কাজ শুরু করে দিয়েছে। পুরো গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে সবাইকে স্ক্যানিং করা হচ্ছে। সবার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র যা লাগে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব আর যেন কারও প্রাণহানি না ঘটে। তবে এখন যেহেতু চিকিৎসার আওতায় চলে আসছে, আশা করি, আর বড় ধরনের কোনো অসুবিধা হবে না।’