লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪ ১৫:২৮ পিএম
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪ ১৬:১৫ পিএম
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি অসুস্থরা। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ইফতার খেয়ে শিশুসহ এক পরিবারের ৯ জন অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শনিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তোরাবগঞ্জ গ্রামের নুরনবী হুজুরের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থরা হলেন, ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তার বাবা নুরনবী, মা আলেয়া বেগম, স্ত্রী ঝুমা আক্তার, ভাবি নাইমা আক্তার, তানিয়া আক্তার, ভাই আরিফ হোসেন, ৭ বছর বয়সি ভাতিজা আয়াত, ৭ মাস বয়সের ভাতিজা নাইম। এর মধ্যে মঞ্জুকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শিশু নাইম তার মায়ের বুকের দুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে।
রবিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে ব্যবসায়ী মঞ্জুর প্রতিবেশী ভাতিজা জাফর আহমেদ ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যায় ইফতারের পর রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মঞ্জু আমার সঙ্গে ছিল। তখন তাকে অসুস্থ দেখায়। দোকানে এসে দেখি তার ছোট ভাই আরিফও নেই। পরে বাড়িতে গিয়ে দেখি সবাই বমি করে অসুস্থাবস্থায় শুয়ে আছে। বিষয়টি স্বাভাবিকভেবে রাতে আর তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। ভোর রাতে খবর নিয়ে দেখি, তারা সবাই অচেতন হয়ে পড়ে আছে। কেউই সেহরি খেতে উঠতে পারেনি। তাৎক্ষণিক তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মঞ্জুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার বিকালে রান্না করতে গেলে মঞ্জুর স্ত্রী ঝুমা হলুদের সঙ্গে সাদা রঙের কিছু মেশানো দেখে। বিষয়টি তিনি তার শাশুড়ি আলেয়াকেও জানান। তারা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিয়েছে। ওই হলুদই তরকারি রান্নায় ও ইফতার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সে খাবার খেয়েই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাত ৯টার পর থেকে তারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে কেউ হলুদের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে রেখে ছিল।’
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আমিনুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘অচেতন অবস্থায় ৯ জনকে হাসপাতাল আনা হয়। এর মধ্যে ৮ জনকে আমাদের এখানে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজনকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি জানা নেই। কেউ আমাদের জানায়নি। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
শনিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ইফতার খেয়ে সদর উপজেলার দালাল বাজারের খোয়াসাগর দিঘীরপাড় এলাকায় বৃদ্ধ নুরুল আমিন, হোসনেয়ারা বেগম, সোয়েবের রহমান ও নাজনিন আক্তার অচেতন হয়ে পড়েন। ১২ মার্চ ভোর রাতে সেহরি খেয়ে কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকার পাটওয়ারী বাড়ির মান্নান পাটওয়ারী, তার স্ত্রী কহিনুর বেগম ও পুত্রবধূ শারমিন আক্তার অচেতন হয়ে পড়েন। তাদের ঘরে থাকা স্বর্ণ ও টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে।