× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কমলনগরে শিক্ষক নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ, আদালতের নিষেধাজ্ঞা

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪ ২২:০৬ পিএম

দক্ষিণ চর মার্টিন চৌধুরী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়। প্রবা ফটো

দক্ষিণ চর মার্টিন চৌধুরী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়। প্রবা ফটো

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। নিয়োগে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে সভাপতির মামাসহ আরও তিন পদে তার নিকটাত্মীয় নিয়োগের বিষয়টি পূর্ব নির্ধারিত বলে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়টির সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল ওয়াদুদ।

এ অভিযোগ এনে মো. আবদুল ওয়াদুদ লক্ষ্মীপুর আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) আদালতের বিচারিক হাকিম মো. নুরুল আফছার দীর্ঘ শুনানির পর ওই বিদ্যালয়ের সকল নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা দেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী এডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন।

এর আগেও আবদুল ওয়াদুদ লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক, জেলা মাধ্যমে শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষা বোর্ডে একাধিকবার সভাপতির নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আহমেদ উল্যাহ সবুজ দক্ষিণ চর মার্টিন চৌধুরী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। দীর্ঘ ৩ মেয়াদে সভাপতির দায়িত্বে থাকাসহ তার কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন ওই বিদ্যালয়ে থাকায় নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।

২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে মিটিং করার সিদ্ধান্ত থাকলেও সভাপতি আহমদ উল্লাহ সবুজ তার এক আত্মীয়র বাড়িতে রাতে মিটিং করেন। রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত মিটিংএ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে রেজুলেশন পরে লেখা হবে বলে তিনি খাতা নিয়ে যান। ওই মিটিংয়ে বিদ্যালয়ের শূন্য পদগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে সিদ্ধান্ত দেখানো হয়। যা স্বাক্ষরকারী সদস্যরা জানতেন না।

পরে ২৫ সেপ্টেম্বর দৈনিক পত্রিকায় প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক ও নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এরপর ওই বছরের ২৬ অক্টোবর আবারও  ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ের ডাক দেন তিনি। ওই মিটিংয়ে উপস্থিত সদস্যদের কাছ থেকে পরপর দুটি উল্লেখিত রেজুলেশনের খাতায় স্বাক্ষর আদায় করেন। রেজুলেশন পরে লেখা হবে বলে রেজুলেশন বই, নোটিশ বইসহ আনুসঙ্গিক কাগজপত্রাদি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল ওয়াদুদের কাছ থেকে সভাপতি তার জিম্মায় নিয়ে যান। পরে ওই মিটিংয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওদুদকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দেখিয়ে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। একই রেজুলেশনে আহমদ উল্লাহ সবুজের আপন চাচা জয়নুল আবেদিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অব্যাহতিপত্র দেওয়ার পরের দিন বিভিন্ন অনিয়ম উল্লেখ করে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে বিভিন্ন পদে প্রাপ্ত আবেদনপত্র ও আবেদন সংক্রান্ত সকল রেকর্ডপত্র প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে না রেখে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান আহমেদ উল্লাহ সবুজ। আবেদনপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, আবেদনকারীদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদের আবেদনে তার নিকটতম আত্মীয় রয়েছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের আবেদনে রয়েছে তার আপন মামা। অফিস সহায়ক পদে রয়েছে তার আরেক মামাতো ভাই। নিরাপত্তাকর্মী পদে রয়েছে তার ফুফাতো ভাই।

এ ছাড়া বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক মো. জয়নুল আবেদিন (ইসলাম শিক্ষা) বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তিনি সভাপতির আপন চাচা। বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক নুরুন্নবী চৌধুরী (শরীর চর্চা) তার আপন চাচা। মোঃ নুরুল কাওছার সহ-প্রন্থাগারিক তার আপন জেঠাতো ভাই এবং নৈশপ্রহরী সহেল তার আপন চাচাতো ভাই।

মো. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘আহমদ উল্লাহ সবুজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করেন। বর্তমান নিয়োগে ৪ জন তার আত্মীয়কে নিয়োগ দিতে আমাকে চাপ দেন। তার অন্যায় আবদারে আমি সাড়া না দেওয়ায় সে কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সাদা রেজুলেশনে স্বাক্ষর নিয়ে কোনও কারণ ছাড়াই আমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরিয়ে তার চাচাকে প্রধান শিক্ষক করেন। এ বিষয়ে আমি জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দেই। বিষয়টি তদন্তাধীন। ১৮ মার্চ চার পদে যারা আবেদন দিয়েছে তাদের পরীক্ষার জন্য ২৩ মার্চ প্রবেশপত্র ইস্যু করেন। যা শিক্ষক ও কর্মচারী নীতিমালা বহির্ভূত। পরে আমি আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত ওই নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা দেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আহমদ উল্যাহ সবুজ বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষা তো এখনও হয়নি। তাহলে কীভাবে বুঝলেন আমি আমার আত্মীয় স্বজনকে নিয়োগ দিচ্ছি। চার পদেই অন্যদের পাশাপাশি আমার আত্মীয়রাও আবেদন করেছেন।’ আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা