× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাগরে কমেছে জেলিফিশ, যাচ্ছে ফিশিং জাহাজ

এস এম রানা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪ ১০:১৪ এএম

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪ ১০:৫৪ এএম

বঙ্গোপসাগর । ছবি : সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগর । ছবি : সংগৃহীত

 বঙ্গোপসাগরে টানা তিন ঘণ্টার ভারী বর্ষণের পর জেলিফিশ কিছুটা কমেছে। শুক্রবার ( ২২ মার্চ) রাতে এই ভারী বর্ষণের পর গত দুই দিনে জেলেদের জালে কিছু মাছ ধরা পড়ছে। আগের সপ্তাহে যে জাহাজ ছিল মাছশূন্য সেই জাহাজে শনি ও রবিবার কিছু মাছ মিলেছে দেখে জেলেদের মুখে ফুটে উঠেছে স্বস্তির রেখা। যদিও এর পরিমাণ ততো স্বাভাবিক নয়। এদিকে জেলিফিশের আধিক্য কিছুটা কমে আসার সংবাদ জানার পর গতকাল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থেকে একাধিক ফিশিং ট্রলার ও জাহাজ সাগরমুখী হয়েছে।

জেলিফিশের আধিক্য কিছুটা কমে আসার কথা জানিয়ে ব্লু সাউথ ফিশিং কোম্পানির পরিচালক সাজিদ বিন সোলায়মান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে গত শুক্রবার দুই থেকে তিন ঘণ্টা ধরে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এরপর জেলিফিশ কিছুটা কমেছে। আমাদের কোম্পানির তিনটি ফিশিং জাহাজ এখন সাগরে আছে। রেডিও মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। জাহাজে থাকা ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে জেনেছি, কক্সবাজার, মিয়ানমারের আশপাশের অংশে সাগরে জেলিফিশ কমেছে। তবে পশ্চিমাংশে এখনও আছে। গভীর সাগরেও আছে। সাধারণত সাগরের ৪০ মিটার গভীরতায় গিয়ে ফিশিং জাহাজগুলো মাছ শিকার করে। আগের সপ্তাহে জাল ফেললে যেখানে কয়েক টন জেলিফিশ উঠত, শনিবার ও গতকাল সেখানে কিছু মাছও পাওয়া যাচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মাছের পরিমাণ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এক-চতুর্থাংশ হতে পারে।’ 

সাজিদ বিন সোলায়মান বলেন, ‘জেলিফিশের আধিক্যের কারণে সামুদ্রিক মাছ স্থানান্তরিত হয়েছিল। এখন এর আধিক্য কিছু কমে যাওয়ায় অন্য মাছ ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করেছে। যদি আরও কয়েক দফা ভারী বর্ষণ হয়, তাহলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটবে।’ তিনি বলেন, ‘এখন বঙ্গোপসাগরের ওয়েস্ট গ্রাউন্ডে ফিশিং চলছে। মিডল গ্রাউন্ড এবং সোয়াত অব নো গ্রাউন্ডে ফিশিং চলছে না।’ 

সাগরে জেলিফিশের আধিক্য কমেছে এমন তথ্য জানার পর কর্ণফুলী নদীতে নোঙরে থাকা থাইল্যান্ডের তৈরি ফিশিং জাহাজ এফ ভি নাজমঈন সাগরে পাঠিয়েছেন মালিক এস এম আল মামুন। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘ভারী বৃষ্টির পর জেলিফিশের আধিক্য কমেছে এমন তথ্য জেনে এফ ভি নাজমঈন সাগরে পাঠিয়েছি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মাছ রূপচাঁদা, পোপা, কোরাল, লাক্ষা, লাল পোয়া, সুরমা, আইলা, চিংড়ি বা ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে স্বল্পহারে মলা ও লেইজ্জা পোয়া পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলোর বাজারমূল্য কম। অল্প দামি মাছ ধরা পড়ছে। তারপরও ঈদের আগে জেলেদের বেতনভাতাদি পরিশোধের আশায় জাহাজ সাগরে পাঠিয়েছি। যদি দুই-তিন দিন টানা বৃষ্টি হয় তাহলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হতে পারে এবং মাছ আরও বেশি মিলবে, আশা করছি।’

সাগরের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের পরিদর্শক এস এম সাজ্জাদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জেলিফিশ কিছুটা কমে আসায় ঈদকে সামনে রেখে কিছু কিছু ফিশিং জাহাজ সাগরমুখী হয়েছে। এ সপ্তাহে টানা দুই-তিন দিন ভারী বর্ষণ হলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটবে।’ 

গতকাল জেলে, ফিশিং জাহাজ মালিক এবং মেরিন ফিশারিজের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এর আগে প্রায় ৩০ বছর আগে একবার সাগরে জেলিফিশের আধিক্য বেড়েছিল। সেই সময়ও জেলেদের জাল মাছশূন্য ছিল। এবারও একই কারণে জেলেদের জাল মাছশূন্য হয়ে পড়ে। বিষয়টি ‘প্রাকৃতিক’ বলে জানান অনেকেই। নির্দিষ্ট সময় পরপর সাগরে এই ধরনের সংকট তৈরি হয়। তবে জেলেদের দেওয়া এমন তথ্যের বিষয়ে সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি। একজন পরিদর্শক জানিয়েছেন, ‘আমরাও জেলেদের মুখে এমন তথ্য শুনেছি। কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি আছে কি না, এখনও জানি না।’ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সাগরের পানির তাপমাত্রার হ্রাসবৃদ্ধি এবং পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে জেলিফিশের আধিক্য বেড়েছে বলে জেনেছি। অতিবর্ষণের পর তা কমতে পারে।’ 

বিভিন্ন তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগরের ফিশিং গ্রাউন্ড দেশের মূল ভূভাগের চেয়েও বড়। এই ফিশিং গ্রাউন্ডের আয়তন প্রায় ১ লাখ ৬৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। এই জলসীমা ‘সোয়াস অব নো গ্রাউন্ড’, ‘সাউথ অব সাউথ প্যাসেজ’, ‘সাউথ প্যাসেস’ ও ‘মিডল গ্রাউন্ড’ নামে চার ভাগে বিভক্ত। এই ফিশিং গ্রাউন্ডে মাছ ধরতে চট্টগ্রামের জেলেরা বঙ্গোপসাগরের ১২৮ কিলোমিটার দূরত্বে পাড়ি দেন। এরপর সাগরের জলরাশিতে মাছ শিকার করেন তারা। সেখানে জেলিফিশের আধিক্যের কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি মাছ থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত জেলেরা মাছ শিকার করতে পারেননি। এখন ভারী বর্ষণের পর মাছ শিকার করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। চট্টগ্রামে এখন ফিশিং জাহাজ আছে ২২১টি। আর কাঠের তৈরি ট্রলার আছে ২৯ হাজারের বেশি। এর মধ্যে বেশিরভাগ ফিশিং যান এখনও অলস সময় পার করছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা