× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জেলিফিশে ছেয়ে যাচ্ছে সৈকত, মাছ ধরা ব্যাহত

এইচ এম হুমায়ুন কবির, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৫:২৮ পিএম

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৫:৩৪ পিএম

কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জালে আটকা পড়া জেলিফিশ ছাড়ানো হচ্ছে। প্রবা ফটো

কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জালে আটকা পড়া জেলিফিশ ছাড়ানো হচ্ছে। প্রবা ফটো

কুয়াকাটাসংলগ্ন গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলে ভেসে আসছে অসংখ্য জেলিফিশ। কয়েক দিন ধরে সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন স্থানে মৃত ও অর্ধমৃত জেলিফিশের পরিমাণ বেড়েছে। জোয়ারের সঙ্গে জেলিফিশগুলো তীরে এসে বালুতে আটকে পড়ায় বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এ ছাড়াও জেলিফিশ আটকে জাল ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে মাছ শিকারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ট্রলার মালিক ও জেলেরা।

প্রায় এক মাস ধরে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে আসা এসব জেলিফিশ ছড়িয়ে পড়ছে সৈকতের বিশাল এলাকাজুড়ে। তবে গত দুই সপ্তাহে এর পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। 

সরেজমিনে কুয়াকাটার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ সৈকতজুড়ে পড়ে আছে মৃত জেলিফিশ। জোয়ারের পানি এবং বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসছে জেলিফিশগুলো। কুয়াকাটার লেম্পুচর, ঝাউবনসহ সৈকতের বিভিন্ন স্থানে সেগুলো আটকে গিয়ে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন পর্যটকরাও। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং সামুদ্রিক কচ্ছপের সংখ্যা কমে গেলে জেলিফিশের উপদ্রব বাড়ে। কেননা সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রধান খাবার জেলিফিশ।

কুয়াকাটা এলাকার জেলে রব কাজী বলেন, ‘গত প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে সৈকতে দেখা মিলছে মৃত জেলিফিশের। কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিম দিকে লেম্বুর চর এলাকা থেকে পূর্বে গঙ্গামতি পর্যন্ত মরা জেলিফিশ পড়ে রয়েছে। এগুলোর একেকটির ওজন ১০ থেকে ১৫ কেজি। আমরা এখন সাগরে মাছ ধরতে পারছি না। জাল ফেললেই মরা জেলিফিশ উঠছে। এগুলো শরীরে লাগলে অসহনীয় চুলকানি হচ্ছে। তাই মাছ ধরা বন্ধ রেখেছি।’

আরেক জেলে হেলাল হোসেন বলেন, ‘কয়দিন পরেই ঈদ, অথচ সাগরে এখন মাছ ধরতে পারছি না। ছেলেমেয়েদের নিয়ে কীভাবে ঈদ করব, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। প্রতি বছরই এ সময়ে জেলিফিশ দেখা যায়। তবে এবারের পরিমাণ খুব বেশি।’

কুয়াকাটার জেলে দেলওয়ার বলেন, ‘আমাদের মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে দুই সপ্তাহ ধরে। মাছ ধরতে না পারায় হাজার হাজার টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’

ট্রলার মালিক মজিবর বলেন, ‘জেলিফিশ আটকে আমার আটটি জাল নষ্ট হয়ে গেছে। মাছ ধরতে না পারায় এবং জাল ছিঁড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার জেলে কয়েক কোটি টাকার লোকসানে পড়েছেন।’

আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শাকিল আহমেদ বলেন, ‘সাগরে জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না। সামুদ্রিক মাছ আহরণের পরিমাণ কমে গেছে। স্থানীয় বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’ 

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘রমজান মাসে কুয়াকাটায় এমনিতেই পর্যটকের সংখ্যা কম। তার ওপর সৈকতের বিশাল অংশজুড়ে মরা জেলিফিশের দুর্গন্ধে পর্যটকরা বিরক্তিবোধ করছেন। যদিও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকার জেলিফিশগুলো মাটি চাপা দিয়ে দুর্গন্ধ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করছেন। তারপরও সৈকতজুড়ে মরা জেলিফিশের উপদ্রবে পরিবেশ বিষিয়ে উঠেছে।’

কলাপাড়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, প্রতি বছর এ সময়টাতে সাগরে জেলিফিশের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। মূলত ছোট ছোট মাছ ও মাছের ডিম খাওয়ার জন্য এসব জেলিফিশ উপকূলের কাছাকাছি আসে। তখন বালিয়াড়িতে আটকে এগুলো মারা যায়। মাসখানেক পর এগুলো কমে গেলে জেলেরা আবার সমুদ্রে স্বভাবিকভাবে মাছ আহরণ করতে পারবে।

সমুদ্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইকোফিশ’-এর কলাপাড়ার সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ‘মূলত সাগরের পানির তাপমাত্রা ও গভীর সাগরে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেলে জেলিফিশের পরিমাণও বেড়ে যায়। সামুদ্রিক কচ্ছপের সংখ্যা কমে গেলেও জেলিফিশের আধিক্য ঘটে। কেননা জেলিফিশ সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রধান খাবার।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা