× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১৪ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই হাসপাতালে, ভোগান্তিতে রোগী-চিকিৎসকরা

সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪৭ পিএম

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৪ ২০:১০ পিএম

টর্চের আলো জ্বেলে রোগী দেখছিলেন চিকিৎসক। প্রবা ফটো

টর্চের আলো জ্বেলে রোগী দেখছিলেন চিকিৎসক। প্রবা ফটো

সাভারের আশুলিয়া এলাকায় অবস্থিত ৫০ শয্যার কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতালে চলছে বিদ্যুৎহীন চিকিৎসা সেবা। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ নেই পাশের ২০ শয্যার আই কেয়ার সেন্টারেও। বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে রোগী, চিকিৎসক ও নার্সরা। বন্ধ রাখা হয়েছে রাত্রিকালীন জরুরি বিভাগে রোগী দেখা। এর মধ্যে মুঠোফোন ও মোমবাতির আলোয় রোগীদের দেখভাল করছেন অনেকে। এছাড়া চিকিৎসাধীন রোগীকে ভর্তি না করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্যকোনো হাসপাতালে। ১৪ দিন ধরে বন্ধ আছে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় সেবা প্রার্থীরা।

জানা গেছে, সাভারের বাংলাদেশ কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতালের দুটি ইউনিট ও আবাসিকে বিদ্যুৎ নেই মার্চের ১৪ তারিখ থেকে। যেখানে আবাসিকসহ প্রতিদিন ২০০-২৫০ কেভি বিদ্যুৎতের প্রয়োজন হয়। তবে বর্তমানে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় এই হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে স্বল্প আয়ের মানুষদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালটির বিদ্যুৎ সরবরাহ দেখভাল করে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১। গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকালে বজ্রপাতের সময় হঠাৎ করেই সংযোগের তার পুড়ে যায়। এতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, প্যাথলজি, এক্সরে কক্ষ, অস্ত্রোপচার কক্ষ (ওটি) এবং নতুন ও পুরাতন দুটি ভবনের সব কক্ষে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে জরুরি বিভাগ সন্ধ্যার পর থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালটিতে ২০১৯ সালে ৮০ কেভির অত্যাধুনিক শক্তিশালী জেনারেটর স্থাপন করা হয়। কিন্তু জ্বালানি তেল কেনার অর্থ বরাদ্দ নিয়ে জটিলতা থাকায় জেনারেটরটি মাঝে মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে স্বল্প সময়ের জন্য চালু করা হয়। জেনারেটরটি চালু করলে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৬-৭ লিটার জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২৭ মার্চ) হাসপাতালটি ঘুরে দেখা যায়, পুরোনো ও নতুন ভবনে বিকল্প ব্যবস্থায় কক্ষের বাতি জ্বলছে। তবে নতুন ভবনের মেডিসিন ও গাইনি বিভাগ পুরোপুরি অন্ধকার। বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে জরুরি বিভাগও। অন্ধকারের সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চিকিৎসক ও রোগীরা। মুঠোফোন ও মোমবাতির আলোয় রোগীদের দেখভাল করছেন অনেকে।

হাসপাতালটির টিকিট মাস্টার মোকছেদ জানান, গত ১৪ তারিখ থেকে বিদ্যুৎ নেই। গরমে ও অন্ধকারে রোগীদের টিকিট দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় কোনো পরীক্ষা এখানে করা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয় দিনে ও রাতে মোবাইল ফোনের আলো ও টর্চ জ্বেলে শৌচাগারে যেতে হয়।

চিকিৎসা নিতে আসা তুহিন নামের একজন জানান, গত কয়েকদিন আগেও হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম। তখন বিদ্যুৎ না থাকায় বাহিরে পরীক্ষা করতে হয়েছে। গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। এখনও বিদ্যুৎ না আসায় শত শত রোগীকে বাহিরে পরীক্ষা করতে হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত খরচ দিয়ে অন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে।

মোমের আলোতে রোগী দেখছিলেন হাসপাতালের ডা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় মোমের আলো, মোবাইল ফোনের টর্চ লাগিয়ে রোগী দেখতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড গরম ও মশার উৎপাত রয়েছে। আমরা কৃর্তপক্ষকে জানিয়েছি এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

বিদ্যুতের তার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মুক্তা কনস্ট্রাকশনের নির্বাহী পরিচালক মনিরুল ইসলাম উজ্জল বলেন, ঘটনার পর বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা পুনরায় তার সরবরাহরে উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি দ্রুত তার পৌঁছে দেওয়া হবে।   

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতালের চিপ মেডিকেল অফিসার ডা. সুরজিৎ দত্ত মুঠোফোনে জানান, বজ্রপাতে বিদ্যুতের তার পুড়ে যাওয়ার পর থেকে তিনটি ভবনে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে গেছে। এর পর থেকে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করা হলে পূর্বের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ক্যাবল দিতে রাজি হয়েছে। আশা করি দুই-তিন দিনের ভেতর পুনরায় সংযোগ দেওয়া হবে।

তিনি জানান, এখনও সরকারি খাতে প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত হয়নি। তাই অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সঠিক সময়ে অনেক কিছুর অর্থ ব্যবহার করা যায় না। এতে করে মাঝে মধ্যে কোনো কিছুর প্রয়োজনে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়।

 কোরিয়ার উদ্যোগে ৩০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বতর্মানে এটি সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এইচএনপিএসপি প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। চারজন ডাক্তার ছাড়াও এখানে মোট ১৭ জন কর্তকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এদের মধ্যে এবার বিভিন্ন পর্যায়ের  ২০ জন কর্মচারীকে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা