নিঝুম দ্বীপে পুকুরে ধরা পড়েছে ১০০টি রুপালি ইলিশ

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের একটি পুকুরে ১০০টি রুপালি ইলিশ ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুর থেকে এ মাছগুলো ধরা হয়। এর আগে গত বুধবার সকালে পুকুরটি থেকে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ ধরা পড়ে।

জানা গেছে, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরটি ৪০টি পরিবার ব্যবহার করে। পুকুরটি লিজ নিয়েছেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হোটেল সি প্যালেসের মালিক আবদুল মান্নান। বিশাল পুকুরে প্রায় সাত দিন ধরে সেচের মাধমে পুকুরের পানি কমান তিনি। গত বুধবার সকালে পুকুরের পানি প্রায় কমে এলে জেলেদের জাল দিয়ে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ মাছ ধরেন। বৃহস্পতিবার সকালে আরও পানি কমিয়ে ১০০টি রুপালি ইলিশ ধরেন। গত বছরেও এ পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নিঝুম দ্বীপের পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর নতুন নয়। প্রায় পুকুরেই ইলিশের দেখা মেলে। আমাদের এখানে কোনো বেড়িবাঁধ নেই, তাই জোয়ার হলেই পানি ঢুকে। সে পানির সঙ্গে ইলিশ মাছও ঢুকে। আজ ১০০টি রুপালি ইলিশ পেয়েছেন এক পুকুরের মালিক। গতকাল ওই পুকুরে প্রায় ১০ কেজি ইলিশ পেয়েছিলেন।’

পুকুরের মালিক আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে পুকুরটি লিজ নিয়ে মাছ ধরি। প্রতি বছর কমবেশি ইলিশ পাওয়া যায় পুকুরটিতে। ২০২২ সালে প্রথম ধাপে ৩৫টি ইলিশ পেয়েছিলাম। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কেজির ওপরে। আর গতকাল পেয়েছি ১০ কেজি, আর আজকে ১০০টি ইলিশ পেয়েছি। আগামী ৪-৫ দিন নিয়মিত মাছ ধরা পড়বে আশা করছি।’

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বলেন, ‘প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় এলে নিঝুম দ্বীপের প্রায় সবগুলো পুকুর তলিয়ে যায়। এর মধ্যে যুগান্তর কিল্লা পুকুরটিও ছিল। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করার সময় ইলিশ মাছ পুকুরে আসে। পানি বের হতে না পারায় মাছগুলো নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে।’

এ বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘প্রায় পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর পাওয়া যায়। এটা কমন হয়ে গেছে। নোয়াখালী উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় নিম্নাঞ্চলগুলো জোয়ারে প্লাবিত হয়। তখন ইলিশ প্রবেশ করায় বর্তমানে সেটি ধরা পড়ছে। নদীতে ইলিশের যেমন বৃদ্ধি পায়, পুকুরে তেমন বৃদ্ধি পায় না এবং স্বাদ ও আকৃতি এক হয় না।’