× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সিআরবির শতবর্ষী গাছ কেটে র‌্যাম্প নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৯ পিএম

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৫৯ পিএম

টাইগারপাস-সিআরবির শতবর্ষী গাছ ও সড়ক ধ্বংস করে র‌্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ‘নাগরিক সমাজ- চট্টগ্রাম’। প্রবা ফটো

টাইগারপাস-সিআরবির শতবর্ষী গাছ ও সড়ক ধ্বংস করে র‌্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ‘নাগরিক সমাজ- চট্টগ্রাম’। প্রবা ফটো

টাইগারপাস-সিআরবির শতবর্ষী গাছ ও সড়ক ধ্বংস করে র‌্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘নাগরিক সমাজ- চট্টগ্রাম’। সোমবার (১ এপ্রিল) বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস মোড়ে শতবর্ষী গাছের নিচে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে শতবর্ষী গাছ ও সড়ক ধ্বংস করে র‌্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা অবিলম্বে না এলে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানায় আন্দোলনকারীরা।

সাংবাদিক প্রীতম দাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক মো. ইদ্রিস আলী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, নাট্যজন ও সাংবাদিক প্রদীপ দেওয়ানজী, চট্টগ্রাম ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশরাফুল ইসলাম, খাল নদী রক্ষা কমিটির আলীউর রহমান, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, পিপলস ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান, লেখিকা মোহছেনা ঝর্না, সাংবাদিক ঋত্তিক নয়ন, সাংবাদিক সারোয়ার আমিন বাবু, সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক সুপ্রতীম বড়ুয়া, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মুন্না, পিপলস ভয়েস সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, যুবনেতা শিবু চৌধুরী, সাংবাদিক মিনহাজুল ইসলাম, কায়সার চৌধুরী প্রমুখ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘যদি র‌্যাম্প করতে হয় অনেক জায়গা আছে, এখানে গাছ কেটে কেন করতে হবে? এখানে কোনো গাছ কাটা চলবে না। প্রকৃতি অক্ষুণ্ন রেখে যে কোনো কিছু করতে পারে, তারা সেটা করুক। মূল লক্ষ্য এসব শতবর্ষী গাছ ও দ্বিতল রাস্তাটি নষ্ট করে সিআরবির পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংস করা। তারপর সিআরবিতে থাবা বসানো। শতবর্ষী গাছ কেটে নতুন চারা লাগানোর কোনো প্রয়োজন নেই।’

অধ্যাপক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘যারা ছয় কিলোমিটার রাস্তা করতে ১৮টি গাছ কাটে, তারা মানুষ নামের শকুন। জলাবদ্ধতা নিরসনে তাদের দারুণ দক্ষতা আমরা দেখেছি। যারা সিআরবি ধ্বংস করতে পারেনি, তারা এখন সিআরবির প্রতিবেশ ধ্বংস করতে চায়। তারা বলছে মাত্র ৪৬টি গাছ কাটা হবে। এটা কেমন মূর্খতা। তারা শতবর্ষী গাছ কেটে চারা লাগাতে চায়। ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের নেই। অপ-উন্নয়নের নামে বাণিজ্য থেকে সরে আসুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাগ্রত আছেন। তরুণদের নিয়ে আমরা আন্দোলন করে সিডিএকে সরে আসতে বাধ্য করব।’

খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই সড়ক শুধু চট্টগ্রামের নয়, দেশ ও বিশ্ব প্রকৃতির সম্পদ। যা সৃষ্টি করতে পারবেন না তা কেন ধ্বংস করছেন। এই নান্দিকতা দেশের সম্পদ। সিডিএর লোকজন যা বলছে তা হঠকারিতা। সিআরবির মাটি কামড়ে আমরা পড়েছিলাম। এখানে এক টুকরো মাটিও কাটতে দেওয়া হবে না। নয়তো আমরা প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এই সম্পদ রক্ষা করব। অবিলম্বে সিডিএ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ঘোষণা দিন। নিউমার্কেট থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের অনেক বিকল্প আছে।’

নাট্যজন ও সাংবাদিক প্রদীপ দেওয়ানজী বলেন, ‘এত বিকল্প থাকতে কেন গাছ কেটে আর দ্বিতল রাস্তা ধংস করে র‌্যাম্প করতে হবে, সেটা বোধগম্য নয়। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দ্রুত বিকল্প স্থানে র‌্যাম্প করার ঘোষণা না দিলে লাগাতার আন্দোলন করে আমরা টাইগারপাস সিআরবির এই সড়ক ও গাছ রক্ষা করব।’

পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান গাছ কাটার বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যারা এসব সিদ্ধান্ত নেন তারা বিভিন্ন স্বার্থে কাজ করেন। আমরা বলছি আত্মঘাতী। সবার যদি এই আত্মঘাতী মনে মতো, তাহলে এ কাজটা করতে পারতাম না। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এমন সব লোককে ওপরে বসান, যাদের কোনো ট্রেনিং নেই। এই গাছগুলো থেকে নানা রকম সুবিধা পেয়ে থাকি, এটা নিয়ে তারা অবহিত নন। প্রকৃতি থেকে যে আমরা নানা সুবিধা পাই, এসব নিয়ে তাদের জানাশোনা, জ্ঞান কিছু নেই। এসব জায়গায় যারা বসেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত।’

এর আগে একই দিন দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর দ্বিতল সড়ক হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কের গাছগুলো রক্ষায় প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নেন সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে একদল পরিবেশকর্মী। প্ল্যাকার্ডে দেখা যায়- ‘উন্নয়নের করাত থেকে গাছদের মুক্তি দাও’, ‘বেঁচে থাকা গাছ আপনার কী ক্ষতি করে’, ‘গাছ কাটার আগে আমাদের কাটো’।

‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে’তে মোট ১৫টি র‌্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর সিআরবি এলাকা হয়ে টাইগারপাস মোড় পর্যন্ত একটি র‌্যাম্প নির্মিত হবে। র‌্যাম্পটি নির্মাণে মহানগরীর ‘ফুসফুস খ্যাত’ সিআরবি এলাকার অন্তত একশটি শতবর্ষী গাছ কাটার উদ্যোগ নিয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সেবা সংস্থা সিডিএ। ইতোমধ্যে সবুজঘেরা সিআরবি এলাকায় দণ্ডায়মান বিশাল বিশাল এসব শতবর্ষী গাছে রঙ দিয়ে নম্বরও দেওয়া হয়েছে। র‌্যাম্পের পিলার কোথায় হবে, সেটাও চিহ্নিত করে লাল রঙ দিয়েছে সংস্থাটি।’

সরেজমিনে দেখা যায়, পলোগ্রাউন্ড থেকে টাইগারপাস মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ মিটার অংশে দেখা যায় ছোট-বড় অন্তত একশটি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এর মধ্যে প্রায় ৫০টি গাছ রয়েছে বিশাল আকৃতির। এসব বড় কড়ই গাছগুলোতে দেওয়া হয়েছে লাল রঙের বিভিন্ন নম্বর। টাইগারপাস মোড় থেকে পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ গেট পর্যন্ত এমন নম্বর দেওয়া বড় গাছের সংখ্যা ৪৫টি। এর বাইরে মাঝারি ও ছোট আকৃতির রয়েছে আরও অন্তত ৭০টি গাছ। এসব গাছ কেটে সিডিএ র‌্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা