গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:০৬ পিএম
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:১৫ পিএম
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে শিল্প পুলিশ এসে আন্দোলনরত শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। প্রবা ফটো
গাজীপুর মহানগরীর জরুন এলাকায় বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে কেয়া নিট কম্পোজিট নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) টানা দ্বিতীয় দিনেও কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ করছেন। কর্মবিরতিতে রয়েছেন কোম্পানিটির প্রায় ৮ হাজার শ্রমিক।
আগের দিনের মতো মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কোনাবাড়ী কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ১০টার দিকে শিল্প পুলিশ এসে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। বর্তমানে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানার ভিতরে অবস্থান করছেন।
জানা যায়, কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেডের কেয়া স্পিনিং মিলস, কেয়া কটন, কেয়া ইয়ার্ন মিলস, কেয়া নিট কম্পোজিট, কেয়া ডাইং অ্যান্ড নিটিং এবং কেয়া কসমেটিকস শাখার প্রায় ৮ হাজার শ্রমিক কর্মবিরতিতে রয়েছেন।
শ্রমিকরা জানান, গত ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের বেতন, ঈদের বোনাস কিচ্ছু দেওয়া হয়নি। ২২ মার্চ বকেয়া ও বোনাস দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেওয়া হয়নি।
শ্রমিকদের পাশাপাশি স্টাফদের বেতনও বেশ কয়েক মাসে ধরে বাকি রাখা হয়েছে। গত দুই বছরের ছুটির টাকাও পরিশোধ করা হয়নি। এ অবস্থায় ঈদের আগে কর্মবিরতিতে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে জানান ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
আগের দিন সোমবার আন্দোলনের মুখে বিকালে শুধু কেয়া স্পিনিং মিলের শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বকেয়া বেতনের দাবিতে তারা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখে।
এ অবস্থায় ইফতারের পর স্পিনিং মিলের শ্রমিকদের সঙ্গে কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেডের গার্মেন্টসের শ্রমিকরা এক হয়ে কোনাবাড়ী কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে। রাত ১১টার দিকে রাস্তা থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু মিলের মূল ফটকে নাইট শিফটের শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন।
মারুফ নামে এক শ্রমিক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, আন্দোলন করার ফলে কেয়া স্পিনিং মিলস, কেয়া কটন, কেয়া ইয়ার্ন মিলসে ঈদ বোনাস দেওয়া হয়েছে। তবে কেয়া নিট কম্পোজিট (গার্মেন্টস) কেয়া, ডাইং অ্যান্ড নিটিং এবং কেয়া কসমেটিকসে ঈদ বোনাস দেওয়া হয়নি। তাই আন্দোলন, বিক্ষোভ চলমান রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্টাফ বলেন, আমরা গত ছয় মাস যাবৎ বেতন পাচ্ছি না। আমরা কীভাবে চলব। বেতন চাইলেই চাকরি নাই। এজন্য আমরা আন্দোলন করতেও সাহস করি না।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের (কাশিমপুর জোন) এএসপি দিপক চন্দ্র মজুমদার জানান, ওই কারখানা শ্রমিকরা বেতন ও বোনাসের দাবিতে গতকাল (সোমবার) থেকে আন্দোলন করছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তবে তারা বলছে বকেয়া পরিশোধ না করলে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
সালেহা নামে এক শ্রমিক বলেন, আমরা কাজ করতে এসেছি। আন্দোলন করতে আসিনি। পেটের ক্ষুধায় আন্দোলন করছি। বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও বাৎসরিক ছুটির টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া জানান, কারখানা শ্রমিকরা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও বোনাস আমাদের কাছে পাবেন। তাদের দেওয়া হবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল কিছু সেকশনে বোনাস দেওয়া হয়েছে।