আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩৮ এএম
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৪৯ পিএম
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। ছবি : সংগৃহীত
সন্দ্বীপের ভূমি ব্যবস্থাপনায় ভূমি ব্যবস্থাপনা, পর্যটনের সম্ভাবনা বিষয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ এবং মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াত সমস্যার সমাধানে প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান
প্র.বা : সন্দ্বীপে নতুন করে বিশাল চর জেগেছে। কী পরিমাণ ভূমি জেগে উঠেছে তার জরিপ হয়েছে কি না?
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান : জরিপের বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। জাহাইজ্জার চরে জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। এই চর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনুকূলে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। সেখানে সেনাবাহিনী তাদের কার্যক্রম চালাবে। বাকি ভূমির জরিপ এখনও শুরু হয়নি। দ্রুতই শুরু হবে।
প্র. বা : নতুন ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী?
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান : সন্দ্বীপে নতুন চরে একটি সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণকেন্দ্র গড়ে তোলার বিষয়ে একটি প্রস্তাব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখানে হিমাগার তৈরি করে মাছ সংরক্ষণের ব্যবস্থার পাশাপাশি ভূমিতে শুঁটকি উৎপাদন করা যাবে। স্থানীয় পর্যায়ে এখন যেভাবে শুঁটকি উৎপাদন করা হয়, সেটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিদেশি কিছু বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে সন্দ্বীপে শুঁটকি উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণন করার পরিকল্পনা আছে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে জার্মানির কিছু কোম্পানি সন্দ্বীপ ঘুরে গেছে। শিল্পায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষও (বেজা) সেখানে কাজ শুরু করেছে।
প্র. বা : এখানে পর্যটনের সম্ভাবনা কেমন বলে মনে করছেন?
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান : সন্দ্বীপ ঘিরে পর্যটকদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে পর্যটকরা বছরজুড়ে যেতে পারেন না। বছরে মাত্র চার মাস সন্দ্বীপের সঙ্গে সহজে যাতায়াত করা যায়। এই সময়গুলোয় কিছু পর্যটকের আনাগোনা থাকে। বাকি সময় সমুদ্র উত্তাল থাকায় পর্যটকেরা যেতে পারেন না। আমি মনে করি, সন্দ্বীপ এবং উড়িরচরে পর্যটনশিল্প সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। ট্যুর অপারেটররা এখানে তাদের কার্যক্রমসহ রিভার ক্রুজও চালু করতে পারে।
প্র. বা : এক্ষেত্রে ট্যুর অপাটেরদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা করা হবে?
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান : জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। জেলা প্রশাসন ট্যুর অপারেটরদের আইনি সহায়তাসহ লাইসেন্স করার বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি পর্যটন উদ্যোক্তারা যেন স্বল্প সুদে ঋণ পায় সে ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। উদ্যোক্তারা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে সন্দ্বীপে পর্যটন খাত বিকশিত হতে পারে।
প্র. বা : পর্যটন খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো কী?
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান : সন্দ্বীপে বাংলাদেশ অভ্যন্তরণী নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পর্যাপ্ত নৌযান নেই। বেসরকারি পর্যায়েও নেই পর্যাপ্ত নৌযান। কুমিরা-গুপ্তছড়া রুটে যে স্পিডবোট চলাচল করে সেগুলোও পর্যাপ্ত নয়। সহজ যোগাযোগ নিশ্চিত করা না গেলে ট্যুর অপারেটসহ যেকোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা কঠিন।
প্র. বা : যাতায়াত সমস্যা সমাধানে জেলা প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি?
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান : জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি সন্দ্বীপে বিআইডব্লিউটিসির জাহাজসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘাটের সুযোগসুবিধা যেন বাড়ানো হয়। বর্তমানে ৩ নম্বর সতর্কতাসংকেত দিলেই জাহাজ চলাচল বন্ধ করতে হচ্ছে। গত বছর ঈদের সময় এমন সমস্যা হয়েছিল। যাত্রীরা সিগন্যাল অমান্য করে যাত্রা করতে চেয়েছিল, কিন্তু জেলা প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। ফলে যাত্রীরা কাউন্টার ভাঙচুর করেছে, মামলাও হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি আশ্বস্ত করেছে বাস্তবতার নিরিখে তাদের সক্ষমতা আরও বাড়াবে।