বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২৮ পিএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৯ পিএম
রবিবার বান্দরবানে সেনা রিজিয়নে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। প্রবা ফটো
বান্দরবানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানে কয়েকজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘গতকাল শনিবার রাতে কিছু সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দুটি অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর এ অভিযান চলবে।’
রবিবার (৭ এপ্রিল) সকালে হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান আসেন সেনাপ্রধান। পরে বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বান্দরবানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম সেনাবাহিনী। দৃশ্যমান কিছু কার্যক্রম আপনারা দেখতে পাবেন। এর ফল আপনারা সময়মতো পাবেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চাই, আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা খুবই পরিষ্কার। বাংলাদেশের জনগণের শান্তির জন্য, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য যা যা করণীয়, প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ সেটাই করতে হবে। সেটা বাস্তবায়নে আমরা সক্ষম হব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, শান্তি কমিটির সঙ্গে কেএনএফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার শান্তি আলোচনা চলছিল। দুটি মুখোমুখি সংলাপ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় বৈঠকের আগেই তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। বম সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডে আয়োজনে ৩১ মার্চ রুমায় বেথেলপাড়াসহ সবগুলো গির্জায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৩৮টি কেক পাঠিয়েছে উৎসব আয়োজন করার জন্য। কিন্তু ২ এপ্রিল তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাল। তাদের মনের ভেতর কী আছে সেটি জানা মুশকিল। তবে সরকার তাদের বিশ্বাস করেছিল কিন্তু কেএনএফ বিশ্বাস রাখেনি।
তিনি আরও বলেন, যৌথ অপারেশন এবং গোয়েন্দা কার্যক্রমও চলছে। তাই অপারেশনের সবগুলো দৃশ্যমান নয়, কিছু কার্যক্রম অদৃশ্যে চলবে, যা সাধারণ মানুষ দেখবে না। কিন্তু সুফল ভোগ করবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলা পরিদর্শনে যান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
অপরদিকে কেএনএফের সন্ত্রাসীর ঘটনায় রুমা এবং থানচিতে আজও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্ক কাটেনি উপজেলাবাসীদের। অপরদিকে এ ঘটনায় মামলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আটটি। তার মধ্যে রুমায় ৪টি এবং থানচিতে ৪টি। সবগুলো মামলায় আসামিরা অজ্ঞাত।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, রুমার ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা করেছে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা, মসজিদের ইমাম, পুলিশ ও আনসার বাদী এবং থানচিতে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা, দুটি পুলিশ বাদী। তবে এখনও পর্যন্ত মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে রুমা ও থানচি কোথাও নতুন করে কেএনএফের গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়নি। হামলা লুটকারীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। রুমা-রোয়াংছড়ি, থানচি-আলীকদম সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে চালানো হচ্ছে সাড়াশি অভিযান।’
এ ছাড়া ব্যাংক ডাকাতির পর থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা-থানচি ও রোয়াংছড়ির সোনালী- কৃষি ব্যাংকের সব লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এই তিন উপজেলার গ্রাহকরা বান্দরবান সদর শাখায় লেনদেন করতে পারবেন বলে জানিয়েছে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম।