রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১৭ পিএম
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১২:২৪ পিএম
রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা এলাকায় ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য স্তূপ করে রাখা গাছের গুঁড়ি। প্রবা ফটো
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় আবাসিক এলাকার ভেতরে ইটভাটা খুলে প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে গাছের গুড়ি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নবায়ন না করেই চালানো হচ্ছে ‘ফাইভ স্টার বিকস্’ নামের এই ভাটা।
কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানোয় পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি স্থানীয়দের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে এই ভাটার কারণে। অভিযোগ রয়েছে, ভাটাসংলগ্ন এলাকার ফলদ বাগানগুলোতেও উৎপাদনও হ্রাস পাচ্ছে। উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভা সদর থেকে মাত্র পৌনে এক কিলোমিটার পশ্চিমে পাঁচন্দর মুন্ডুমালা নামক আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এই ইটভাটা নিয়ে তাই ক্ষোভের অন্ত নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। কিন্তু বারবার অভিযোগ করেও সুরাহা পাচ্ছেন তারা। অবশ্য ভাটার মালিক শামসুজ্জামান শামসুল জানালেন, সব ম্যানেজ করেই ভাটা চালাচ্ছেন তিনি!
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাটাটিতে মাঝে মধ্যেই পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনকে আসা-যাওয়া করতে দেখা যায়। এরপরও কীভাবে ওই ভাটায় কাঠ পোড়ানো হয় এনিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। তাঁদের দাবি পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অনুমোদনহীন ওই ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ দিয়ে চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। কাজ। এর ফলে অতিরিক্ত ধোঁয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ। আশপাশের আমসহ বিভিন্ন ফলদ বাগানের উৎপাদনও কমে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, ভাটাসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের সাধারণ মানুষ সহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিদিন যাতায়াত করেন। কিন্তু তেমন নজরদারি চোখে পড়ে না। একারণে ভাটা মালিক বেপরোয়া হয়ে জনবসতি আবাসিক এলাকায় এমন ভাটা স্থাপন করে জ্বালানি কাঠ ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ করছেন। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা এই অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উপজেলা প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এসব বিষয়ে জানতে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর সহকারী উপ-পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘আমার জানামতে ওই ভাটার লাইসেন্স নবায়ন নেই। এরপরও ভাটার পরিধি বাড়িয়ে যদি তাজা জ্বালানি কাঠ দিয়ে এবারও ইট পোড়ানোর কাজ করা হয় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সরেজমিন ফাইভ স্টার ব্রিকসে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইটভাটায় দেদারসে পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। উত্তরপাশে স্তুপ করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির জ্বালানি কাঠ। ভাটার চারিদিকে ও আশে পাশে এবং ওপরে বিপুল পরিমান গাছের গুড়ি দেখা যায়। পশ্চিম দিকে কিছু কয়লার মজুত চোখে পড়লেও তা ছিল অতি সামান্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, ভাটাটিতে মাঝে মধ্যেই অপরিচিত লোকজনকে যাতায়াত করতে দেখা যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন। তাঁরা আসেন ইটভাটা ঘুরে ঘুরে দেখেন, আবার চলেও যান। কিন্তু আজও বন্ধ হয়নি জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর
এবিষয়ে ইটভাটার মালিক শামসুজ্জামান বলেন, সব ম্যানেজ করেই কাঠ পুড়িয়ে ভাটা চালানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কয়লা ফুরিয়ে গেছে। এজন্য কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।