রাঙামাটি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:০৬ পিএম
বুধবার রাঙামাটি পৌরসভা চত্বরে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, চাংক্রান ও বিহু উৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন চাকমা সার্কেল চিফ রাজা দেবাশীষ রায়। প্রবা ফটো
পার্বত্য চট্টগ্রামে
সংঘাতের নাটক সাজানো হয় বলে মন্তব্য করেছেন চাকমা সার্কেল চিফ রাজা দেবাশীষ রায়।
বুধবার (১০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাঙামাটি
পৌরসভা চত্বরে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, চাংক্রান ও বিহু উৎসবের আলোচনা সভায়
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রাজা দেবাশীষ রায় বলেন,
আমাদের অঞ্চলে পাতানো খেলা হয়। মাঝেমধ্যে কৃত্রিমভাবে সংঘাতের নাটক সাজানো হয়।
এইসব নাটকের যদি অবসান না হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি
বাস্তবায়ন হতে পারে না। জুম্ম, পাহাড়ি, আদিবাসী হিসেবে,
বাংলাদেশি হিসেবে আমরা মনে করি,
মাথা নত করে থাকব না। আমাদের যেমন বঞ্চনা রয়েছে, আবার আশার কথাও বলতে হবে। আমরা
অবশ্যই বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়াব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলব। কিন্তু আমাদের আশার বাণীও
শোনাতে হবে; যাতে পরবর্তী প্রজন্ম নিজেদের শক্তি-উদ্যম নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে
পারে।
বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু,
বিষু, চাংক্রান ও বিহু-২০২৪ উপলক্ষে বুধবার সকালে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গনে বেলুন
উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সাবেক জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ও শিক্ষাবিদ
নিরূপা দেওয়ান। বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, চাংক্রান ও বিহু উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক
প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চাকমা সার্কেল চিফ
রাজা দেবাশীষ রায়। আরও অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ
খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, নারী অধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট
সুস্মিতা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট চঞ্চু চাকমা,
বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক শিশির চাকমা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বেলুন
উড়িয়ে উদ্বোধনের পর পাহাড়ি বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা ডিসপ্লে পরিবেশন করে। আলোচনা সভা শেষে
ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন পাহাড়ি তরুণ-তরুণী থেকে শুরু
করে নানা বয়সী মানুষ। রাঙামাটি পৌরসভা চত্বর থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে জেলা
শিল্পকলা একাডেমির সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিকালে সেখানে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়।
বিজু, বৈসুক, সাংগ্রাই,
বিষু, বিহু, সাংক্রাণকে সামনে রেখে আগামী ১২-১৪ এপ্রিল শুরু হবে বিজুর মূল
আনুষ্ঠানিকতা। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ১৪টি জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, বৈসুক,
সাংগ্রাই, বিষু-বিহু, সাংক্রাণ। এই উৎসবের প্রথম দিনকে
বলা হয় ফুল বিজু। উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল বিজু এবং তৃতীয় দিন হচ্ছে গজ্যাপজ্যা
বিজু বা নববর্ষ উৎসব। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে পাহাড়িরা পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন
বছরকে বরণ করে নেয়।