নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৪ ২০:১২ পিএম
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২২ পিএম
গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রবা ফটো
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় নৌবাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে ওয়ারেন্টভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, মামলার ১ নম্বর আসামি স্বপন কর ও ৪ নম্বর আসামি দুলাল দেব। উভয়ের বাড়ি উপজেলার শ্যামগ্রামে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্যামগ্রামের বাসিন্দা নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত 'অনারারি লেফট্যানেন্ট' প্রদীপ কুমার দেবনাথ চাকরি থেকে অবসর নিয়ে শ্যামগ্রামে এসে 'বনলতা বিপিন বস্ত্রালয়' নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু করে। পাশাপাশি জাহাজ তৈরি ও মেরামতের (শিপ বিল্ডিং) ঠিকাদার হিসেবেও বিভিন্ন দরপত্রে অংশ নেন।
মামলার বিবরণে অভিযোগ করা হয়, ঘটনার দিন গত বছরের ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে শ্যামগ্রামের বাসিন্দা লিটন নাগ ও স্বপন করের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী বনলতা বিপিন বস্ত্রালয়ে আকস্মিকভাবে হামলা চালায়। এসময়
হামলাকারীরা দোকান মালিক প্রদীপ দেবনাথকে মারধর করে। হামলাকারীরা প্রদীপ দেবনাথের বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তার প্যান্টের পকেট থেকে নগদ ৫৫ হাজার ও দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে নগদ ৪৭ হাজারসহ মোট ৯৭ হাজার টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে প্রদীপের কাছে নগদ আরও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ১০ দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
ঘটনার পর প্রদীপ দেবনাথ বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাঁদাবাজির অভিযোগে স্বপন কর ও লিটন নাগসহ মোট ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে আদালতের নির্দেশে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক আক্তার হোসেন মামলাটি দীর্ঘ ৭ মাস তদন্ত করে এ মামলায় অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পান।
সম্প্রতি তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত ১২ আসামির বিরুদ্ধে 'গ্রেপ্তারি পরোয়ানা' জারি করে।
১২ জনের সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কাগজ গতকাল মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) নবীনগর থানায় এসে পৌঁছলে, নবীনগর থানার পুলিশ দুজনকে রাতে গ্রেপ্তার করে আজ সকালে আদালতে চালান করে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী প্রদীপ দেবনাথ বলেন, ঘটনার পর চাঁদাবাজ ও হামলাকারীদের ভয়ে আমি গত আটমাস ধরে আমার বনলতা বিপিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে রেখেছি। হামলাকারীদের সবাই গ্রেপ্তার না হলে এবং এদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর বিচার করা না গেলে আমাকে ওরা হত্যা করতে পারে।
এ বিষয়ে লিটন নাগসহ একাধিক আসামির সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও এ ঘটনা নিয়ে কথা বলা যায়নি।
নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার আদালত থেকে ১২ জনের নামে ওয়ারেন্টের কাগজপত্র পাই। এরপর পুলিশ আসামিদের ধরতে রাতে অভিযান চালায়। অভিযানে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।